বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গোলমাল। নিজস্ব ছবি।
প্রধান অতিথি হয়ে এসেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তাঁর সামনেই প্রাক্তনীদের একটি অংশকে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সমাবর্তন অনুষ্ঠান চলাকালীন এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল বিশ্বভারতীতে। এই ঘটনার পরেই উপাসনাগৃহের মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ দেখান প্রাক্তনীদের একাংশ।
শুক্রবার সকালে নির্ধারিত সময়েই শুরু হয় বিশ্বভারতীর সমাবর্তন। এই অনুষ্ঠানে রাজনাথের পাশাপাশি রয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারও। ভাষণ দিতে গিয়ে রাজনাথ বলেন, ‘‘আমাকে যে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করে আনা হয়েছে, এর জন্য বিশ্বভারতীকে ধন্যবাদ। সুভাষ সরকার যেমন বললেন, আমি এক সময়ে ফিজিক্সের শিক্ষক ছিলাম। তাই আমি যখনই এই ধরনের কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাষণ দিতে যাই, রাজনীতিক হিসাবে যাই না। যাই শিক্ষক হিসাবে।’’
সেই অনুষ্ঠান শুরু আগে থেকেই উত্তাপ ছড়িয়েছিল বিশ্বভারতীতে। সকালে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর জুড়ে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে পোস্টার দেখা গিয়েছে। সেই পোস্টারে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি তোলা হয়েছে। তাতে লেখা, ‘ভিসি দূর হটো, বিদ্যুৎ চক্রবর্তী গো ব্যাক’। পোস্টারে সমাবর্তনে ‘রাজনৈতিক অনুষ্ঠান’ বলেও দাবি করা হয়েছে। এই ঘটনার পরেই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রাক্তনীদের ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সামনে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের জেরে পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে কয়েক জন প্রাক্তনীকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়। কিন্তু যাঁদের সঙ্গে ব্যাগ, মোবাইল ফোন ছিল, তাঁদের কোনও ভাবেই ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলেই দাবি।
ঘটনাচক্রে, দিন দু’য়েক আগেই বিশ্বভারতীর কতিপয় আশ্রমিক, প্রাক্তনীদের ‘অশিক্ষিত’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ। বলেছিলেন, ‘‘এখানে অনেক অশিক্ষিত এবং অল্পশিক্ষিত মানুষেরা আছেন যাঁরা নিজেদের পরিচিতি বাড়ানোর জন্য শব্দবাণের দ্বারা বিশ্বভারতীকে কলুষিত করে যাচ্ছেন। আমি বলি, এঁরা বুড়ো খোকা। বুড়ো বয়সে মানুষের ভারসাম্য হয়তো নষ্ট হয়, সেই জন্যই বোধ হয়। কারণ বিশ্বভারতীর কোনও কাজে তাঁদের পাওয়া যায় না। কিন্তু তাঁরা প্রতিনিয়ত বিশ্বভারতীর সমালোচনা করতে উৎসুক।’’ তার পরেই প্রাক্তনীদের সমাবর্তনে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠল।