চন্দ্রনাথকে কড়া ভাষায় ধমক দেন বিচারক
বোলপুরের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীকে ভর্ৎসনা করল সিউড়ি আদালত। বৃহস্পতিবার আদালতে একটি মামলার শুনানিতে সাক্ষী হিসাবে ‘ভুয়ো’ নথি জমা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বোলপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে। সেই নথি খতিয়ে দেখে চন্দ্রনাথকে কড়া ভাষায় ধমক দেন বিচারক প্রোজ্জ্বল ঘোষ।
২০১৬ সালে সাঁইথিয়া থানা এলাকায় সিপিএম ও তৃণমূলের মধ্যে একটি সংঘর্ষে আহতদের বোলপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তাঁদের চিকিৎসা করেন চন্দ্রনাথ। ওই সংঘর্ষের ঘটনার প্রেক্ষিতেই সিউড়ি আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়। বৃহস্পতিবার সেই মামলারই শুনানিতে সাক্ষী হিসাবে হাজির হয়ে আহতদের চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু নথি আদালতে জমা দেন চন্দ্রনাথ। অভিযোগ, সেই নথি ‘ভুয়ো’। নথিতে রোগীদের নামের জায়গায় বিস্তর কাটাকাটি ছাড়াও নানাবিধ সমস্যা রয়েছে বলেও আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই নথি দেখেই চন্দ্রনাথকে ভর্ৎসনা করেন বিচারক।
গরু পাচার মামলায় অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার ঠিক আগেই তাঁর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন চন্দ্রনাথ। অনুব্রতকে শেষ যে বার সিবিআই তলব করেছিল, ঠিক তার আগের দিন চন্দ্রনাথ সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন, বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতার ‘চাপেই’ তাঁকে ‘বেডরেস্টের’ পরামর্শ দিতে ‘বাধ্য’ হয়েছিলেন তিনি। তাঁকে ‘ফাঁসানো’র চেষ্টা হয়েছে বলেও দাবি করেন। চিকিৎসা করতে দিয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে অনুব্রতর অনুরোধ তিনি ফেলতে না পারলেও পরে বিবেকের দংশনে তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে ‘সত্য’ বলছেন বলে দাবি করেন। এই ঘটনার পরেই চিকিৎসক সমাজের বড় অংশ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা চন্দ্রনাথের সাহসের প্রশংসা করেন। সেই চন্দ্রনাথই এ বার বিচারকের ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন।
ঘটনাচক্রে, সিবিআই হাজিরা এড়াতে ‘বেডরেস্ট’ লিখতে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল চাপ দিয়েছেন বলে সরব হয়েছিলেন চন্দ্রনাথ। যদিও এই মামলাটির সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক বা যোগাযোগ নেই। তবে, অনুব্রত-কাণ্ডে চিকিৎসক চন্দ্রনাথের নাম পরিচিত হয়ে যাওয়ায় আদালতের ভর্ৎসনার ঘটনাটি ‘বাড়তি কৌতূহল’ তৈরি করেছে।