বীরভূমে তদন্তে আসা সিবিআই আধিকারিক সম্পত মীনা। নিজস্ব চিত্র।
আদালতের নির্দেশে ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’য় খুন-ধর্ষণ ও ধর্ষণের চেষ্টার মতো গুরুতর অভিযোগের মামলাগুলির তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। রাজ্য জুড়ে চারটি দল গঠিত হয়েছে সিবিআইয়ের তরফে। প্রতিটি দলের নেতৃত্বে রয়েছে এক জন জয়েন্ট ডিরেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিক।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বীরভূম জেলায় এই মুহূর্তে সিবিআই আধিকারিকদের নিয়ে গঠিত দলটিকে আইজি পদমর্যাদার যে মহিলা জয়েন্ট ডিরেক্টর নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি সম্পত মীনা। ১৯৯৪ ব্যাচের (ঝাড়খণ্ড ক্যাডার) এই আইপিএস এর হাতেই ছিল উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ের মতো সংবেদশীল মামলার দায়িত্ব। সিবিআইয়ে যোগ দেওয়ার আগে ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপার থাকাকালীন মহিলাদের প্রতি অপরাধ, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও শিশু পাচারের উপরে উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন বলে খবর। ঝাড়খণ্ডের রাঁচীর প্রথম সিনিয়র সুপারিনটেন্ডেন্ট অফ পুলিশ ও আইজি (ক্রাইম) সিইডির পদ সামলেছেন। প্রতিটি থানাকে শিশু মিত্র থানা করা হোক বা ‘অপারেশন মুসকান’এর মাধ্যমে ওই রাজ্য ও সারা দেশ থেকে পাচার হওয়া ৭০০ শিশুকে উদ্ধার করে তাঁদের পুনর্বাসন বা বাবা মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে রীতিমতো চর্চায় ছিলেন সম্পত। রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুলিশ মেডেল ছাড়াও নানা পুরস্কার তাঁর ঝুলিতে।
ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টের প্রেক্ষিতে অগস্ট এর ১৯ তাখির কলকাতা হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল, ভোট পরবর্তী হিংসায় খুন ও ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনাগুলির তদন্ত করবে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, ৪৩টি খুন ও ২৮টি মহিলাদের উপরে অপরাধের মামলা রয়েছে। রাজ্য জুড়ে চারটি দলে রয়েছেন চার আইজি, ডিআইডি, এসপি ডিএসপি, ইন্সপেক্টর সহ মোট ১০৯ জন পুলিশ আধিকারিক। মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভোট পরবর্তী হিংসার নিরিখে অগ্রগণ্য জেলা বীরভূম। সেখানেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন সম্পত মীনা।
পুলিশ সূত্রে খবর, চারটি খুনের মামলা ইতিমধ্যেই সিবিআই নিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে মহিলাদের উপরে হওয়া অপরাধের অভিযোগও। কিন্তু মোট কতগুলি মামলা সিবিআই হাতে নেবে সেটা স্পষ্ট নয়। তবে মামলা যাই হোক, তদন্ত যথাযথ হবে বলে ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই দিয়েছেন সম্পত মীনা নেতৃত্বাধীন সিবিআই দল। শনিবার থেকে কাঁকরতলা, ইলামবাজার, মল্লারপুর সহ নানা ঘটানার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত শুরু করেছে গোয়েন্দা সংস্থা।