ইনহেলার নিচ্ছেন অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র
শারীরিক অসুস্থতা এবং নির্বাচনী প্রচারের কাজে ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল সোমবার সিবিআইয়ের সামনে হাজির হননি। তাঁকে কলকাতার নিজাম প্যালেসে ডাকা হয়েছিল গরু পাচার কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। সকালে অসুস্থতা ও প্রচারে ব্যস্ততার উল্লেখ করে তিনি ই-মেল পাঠানোর পরে এ দিনই পাল্টা মেল করে ২৫ ফেব্রুয়ারি তাঁকে ফের সিবিআই দফতরে হাজির হতে বলেছেন তদন্তকারীরা। সিবিআই সূত্রের খবর, ডাকযোগেও নতুন তলবি চিঠি পাঠানো হয়েছে তাঁর কাছে।
সিবিআই-কর্তাদের দাবি, গরু পাচারের মূল চক্রী বলে অভিযুক্ত এনামুল হকের সঙ্গে অনুব্রতের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের সূত্র মিলেছে। গরু পাচারের লভ্যাংশের টাকা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগ করা হয়েছে। তা ছাড়া এনামুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বীরভূম জেলায় গরু পাচারে একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির যোগাযোগের হদিস মিলেছে। ওই সব বিষয়ে অনুব্রতকে প্রশ্ন করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের দিন বীরভূমের ইলামবাজারে এক বিজেপি কর্মীর হত্যাকাণ্ডেও অনুব্রতকে দুর্গাপুরের সিবিআইয়ের ক্যাম্প অফিসে সম্প্রতি তলব করেছিল সিবিআই। সেই তলবি নোটিসের প্রেক্ষিতে অনুব্রত কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। সিবিআইয়ের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘বীরভূমের ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনায় দু’টি খুনের মামলায় অনুব্রতকে দুর্গাপুরে আমাদের ক্যাম্প অফিসে তলব করা হয়েছে। তিনি অসুস্থ বলে কলকাতা হাই কোর্টে জানান। ওই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদে সহযোগিতার নির্দেশের পাশাপাশি চার সপ্তাহের জন্য আইনি রক্ষাকবচ দিয়েছে উচ্চ আদালত।’’
সিবিআইয়ের এক কৌঁসুলি জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্তকারীদের মুখোমুখি হওয়ার ক্ষেত্রে অসুস্থতাকে কারণ হিসেবে দেখাচ্ছেন অনুব্রত। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে তিনি রাজনৈতিক কার্যকলাপ-সহ নানা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকছেন। ‘‘আমরা আদালতে পুরো বিষয়টি জানিয়েছি। পরে পুরো ঘটনা হলফনামা আকারে আদালতে জমা দেওয়া হবে,’’ বলেন ওই কৌঁসুলি।
এই ব্যাপারে বক্তব্য জানতে এ দিন অনুব্রতের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর এক নিরাপত্তারক্ষী ফোন ধরে বলেন, “দাদা তিন দিন ধরে জ্বরে পড়ে আছেন। বাড়ি থেকেও বেরোচ্ছেন না। এখন কথা বলার মতো অবস্থাতেও নেই। ওঁর সম্মতি ছাড়া ওঁকে ফোন দেওয়া যাবে না।”