লালন ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
বিজেপি কর্মী খুনে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার বাড়িতে মঙ্গলবার তল্লাশি চালাল সিবিআই।
ইলামবাজারের গোপালনগরে ওই বিজেপি কর্মী গৌরব সরকারকে খুনের ঘটনায় এর আগে একাধিকবার সিবিআই আধিকারিকেরা গ্রামে এসে মৃতের পরিবার ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন। এ দিন এক অভিযুক্তের বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি চালান তাঁরা। এ দিন এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়।
ভোট গণনার দিন ওই গ্রামের বিজেপি কর্মী গৌরব সরকারকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গণনা চলাকালীন তৃণমূল ম্যাজিক ফিগার পেরোতেই বিভিন্ন জায়গায় পাশাপাশি গোপালনগর গ্রামে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা বিজয় উল্লাস করছিলেন। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, সেই সময় ওই এলাকায় থাকা বিজেপি কর্মী গৌরাঙ্গ সরকারের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা। তাঁর দুই ছেলে গৌরব ও সেতু বাধা দিতে গেলে তাঁদেরও ব্যাপক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই গৌরবের মৃত্যু হয়। তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, তাঁদের দলের কেউ ঘটনায় জড়িত নয়।
মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে ইলামবাজার থানায় তৃণমূলের নেতা, কর্মী-সহ বেশ কয়েকজনের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনায় বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতারও করা হয়। ওই খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত রয়েছেন ওই গ্রামেরই তৃণমূল নেতা লালন ঘোষ। তিনি দীর্ঘদিন গোপালনগর গ্রামের তৃণমূলের বুথ সভাপতি ছিলেন। এ দিন ঘটনার তদন্তে গিয়ে সিবিআইয়ের প্রতিনিধিরা লালনের বাড়ি পৌঁছন। কিন্তু বাড়িতে তিনি না থাকায় তাঁকে ফোন করে বাড়িতে ডেকে পাঠান সিবিআই আধিকারিকেরা। এরপর দীর্ঘক্ষণ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পাশাপাশি তাঁর পুরো বাড়ি জুড়ে তল্লাশি চালান সিবিআই কর্তারা।
একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, লালনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে সিবিআই একটি খাতা, একটি মোবাইল ফোন-সহ বেশ কিছু কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করে। তদন্তের স্বার্থে আবারও সিবিআই লালনের বাড়িতে আসবে বলে জানা গিয়েছে। লালন বলেন, ‘‘আমি সিবিআইকে বলেছি তদন্তে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করব। এই ঘটনায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।’’ ইলামবাজারে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি চিত্তরঞ্জন সিংহ বলেন, “অভিযুক্ত লালন ঘোষের বিরুদ্ধে এর আগেও সরকারি প্রকল্পের টাকা নয়ছয়-সহ কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আমরা চাই এই ঘটনায় প্রকৃত যারা দোষী তাদের অবিলম্বে শাস্তি হোক।”
যদিও সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। ইলামবাজারে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ফজলুর রহমান বলেন, “সিবিআই বিজেপির হয়ে কাজ করছে। জেলায় আমাদের বহু তৃণমূল কর্মী খুন হয়েছেন। তাঁদের বাড়িতে তদন্তে না গিয়ে যে সমস্ত বিজেপি কর্মীদের নানা কারণে মৃত্যু হয়েছে তাদের বাড়ি যাচ্ছে।” লালন ছাড়া এই ঘটনায় অন্য যারা অভিযুক্ত, তাঁদেরও বেশ কয়েকজনের বাড়িতে এ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা।