অনুব্রত মণ্ডল।
অনুব্রত মণ্ডলের ‘ঘনিষ্ঠ’ কাউন্সিলর বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে মুন আবারও সিবিআইয়ের মুখোমুখি। তিন দিন আগেই তাঁকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। অন্য দিকে, সিবিআইও তাঁকে ডেকে পাঠায়। এর পর বৃহস্পতিবার সিবিআইয়ের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি শান্তিনিকেতনের রতনকুঠিতে তদন্তকারীদের অস্থায়ী শিবিরে যান। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দাদের মুখোমুখি হয়েছেন ‘অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ’ আরও এক কাউন্সিলর ওমর শেখ।
গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে জেলবন্দি অনুব্রত। ১১ নভেম্বর, শুক্রবার তাঁকে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করানো হবে। তাঁর আগে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রতের দুই ‘ঘনিষ্ঠ’ কাউন্সিলরকে তলবকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
একটা সময়ে অনুব্রতের বাড়িতে পরিচারকের কাজ করতেন বিশ্বজ্যোতি। এখন তিনি বোলপুরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। গরু পাচার মামলায় অনুব্রতের বিরুদ্ধে জমা দেওয়া চার্জশিটে সিবিআই দাবি করেছে, বিশ্বজ্যোতির অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। সেই কারণে তাঁর অ্যাকাউন্টের সমস্ত তথ্য সংগ্রহও করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা।
সিবিআই সূত্রে খবর, ২০১১ সালে অনুব্রতের বাড়িতে পরিচারকের কাজে যোগ দেন বিশ্বজ্যোতি। তখন তাঁর বেতন ছিল মাসিক পাঁচ হাজার টাকা। সেই বিশ্বজ্যোতির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কী ভাবে প্রায় ৪৬ লক্ষ টাকা নগদ জমা পড়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, বিশ্বজ্যোতির অ্যাকাউন্ট থেকে যা লেনদেন হয়েছে, সবই অনুব্রত কিংবা তাঁর দেহরক্ষী সহগল হোসেনের নির্দেশে। তিনিও গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে দিল্লির তিহাড় জেলে রয়েছেন। সেই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আগেও বিশ্বজ্যোতিকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। কিন্তু তিনি সদুত্তর দিতে না-পারায় তাঁকে বার বার ডেকে পাঠানো হচ্ছে। ডেকেছে ইডিও।
অন্য দিকে, সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরে যান বোলপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তথা অনুব্রতের ‘সর্বক্ষণের সঙ্গী’ ওমরও। বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ২টো নাগাদ তিনি সেখানে পৌঁছন। ঠিক তার মিনিট পনেরো বাদেই ওমরকে সিবিআইয়ের শিবির ছেড়ে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। সূত্রের খবর, তাঁকে কিছু নথি নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের মুখোমুখি হয়েছেন বোলপুরের ‘গাঙ্গুলী লটারি’র মালিক বাপি গঙ্গোপাধ্যায়। দাবি, তাঁর দোকান থেকে অনুব্রতের জেতা ১ কোটি টাকার লটারি সেখান থেকেই ‘ক্যাশ’ করা হয়েছিল। যদিও অনুব্রত নিজে লটারি জেতার কথা সরাসরি স্বীকার করেননি কখনও।