গাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে গরু ও মোষ। — নিজস্ব চিত্র।
কয়েক মাস আগে দুধের গাড়ি উল্টে বার হয়েছিল গরু। পুরুলিয়ার হুড়ায় সেই ঘটনা ঘিরে গরু পাচারের অভিযোগ উঠেছিল। এই আবহে রবিবার রাতে সেই হুড়াতেই গরু-মোষ বোঝাই বেশ কয়েকটি গাড়ি আটক করলেন ওই এলাকার তৃণমূল কর্মীরা। গাড়ি এবং গবাদি পশুগুলি পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে বেশ কয়েক জনকে। ধৃতদের সোমবার পুরুলিয়া জেলা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক ৫ জনকে ১০ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাকি ২৮ জনকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আটক করা হয়েছে মোট ২৩টি গাড়ি। এ নিয়ে পুরুলিয়া জেলার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন জানিয়েছেন, ২৩টি গাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে গরু এবং মোষ মিলিয়ে মোট ১৪৯টি গবাদি পশু। তার মধ্যে ৮টি পশু মারা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে ওই গবাদি পশু উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মোট ৩৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে গবাদি পশু পাচার-সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এই নিয়ে হুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রসেনজিৎ মাহাতো বলেন, ‘‘দলের যুব নেতা চন্দন দত্ত-সহ আমাদের তৃণমূল কর্মীরা রবিবার রাতে ওই গাড়িগুলি আটক করেছেন।’’
এই ঘটনা ঘিরে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে শুরু হয়েছে চাপানউতর। তৃণমূলের অভিযোগ, পাচারচক্রের সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে বিজেপির। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলকেই দোষারোপ করেছে গেরুয়া শিবির। পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশ কিছুটা হলেও নিষ্ক্রিয়। তাই আমাদের কর্মীদের মাঠে নামতে হল। এটা পুলিশের কাজ। অথচ পুলিশ তৃণমূল কর্মীরা থানায় গেলে তাড়িয়ে দেন। কিন্তু বিজেপি নেতাকর্মীদের খাতির করেন। এর কারণ বেআইনি কাজকর্মকে তৃণমূল কর্মীরা সমর্থন করেন না। এই পাচার বিজেপির মদতেই হচ্ছে।’’
পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিবেক রাঙা বলেন, ‘‘তৃণমূল হাস্যকর কথাবার্তা বলছে। সরকার ওঁদের, প্রশাসন ওঁদের। মুখ্যমন্ত্রীও ওঁদের। অথচ ওঁরা বলছেন, পুলিশ বিজেপির কথায় কাজ করছে। এ সব কেউ বিশ্বাস করবে কি? সকলেই জানে, পুলিশ কাদের হয়ে কাজ করে। পুলিশ তৃণমূলের বি টিম।’’