পথ দুর্ঘটনা এড়াতে এ বারে গতিতে নজর

মালবাহী গাড়ির ঘণ্টা পিছু গতি বেঁধে, এক মোড় থেকে অন্য মোড়ের দূরত্ব মেপে নজরদারি চালানো শুরু করল জেলা পুলিশ।

Advertisement

মহেন্দ্র জেনা

বোলপুর শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৭ ০১:২২
Share:

মালবাহী গাড়ির ঘণ্টা পিছু গতি বেঁধে, এক মোড় থেকে অন্য মোড়ের দূরত্ব মেপে নজরদারি চালানো শুরু করল জেলা পুলিশ।

Advertisement

এতদিন জেলা পুলিশের উদ্যোগে, ঢাক ঢোল পিটিয়ে পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ পালন হয়েছে। গাড়ির চালক ও খালাসিদের নিয়ে, সচেতনতা শিবির আয়োজন করছে জেলা পুলিশ। পথের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে নজরদারি চালানোর পাশাপাশি অসাবধানে, দুর্ঘটনার ভয়াবহতা নিয়ে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি দেখিয়ে সচেতনও করার কাজও করেছে পুলিশ। কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। এ বার গতি বেঁধে নজরদারি শুরু করল তারা। সূত্রের খবর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সুবিমল পালের উদ্যোগে প্রাথমিক ভাবে বোলপুর মহকুমায় এমন ব্যবস্থা সম্প্রতি চালু করেছে জেলা পুলিশ।

কীভাবে গতিতে নজরদারি চলছে?

Advertisement

শ্রীনিকেতন ট্রাফিক মোড় থেকে বোলপুর-সিউড়ি রাস্তার হাটিকরে সেতু পর্যন্ত মোট ২৪ কিলোমিটার। ওই রাস্তা চলাচলকারী ভারী যান বিশেষ ডাম্পারের ক্ষেত্রে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে ৪০ মিনিট। ৪০ মিনিট থেকে সময় কম মানেই চড়া জরিমানার মুখে পড়তে হবে চালকদের। এ দিন শেখ মুজিবর নামে এক লরি চালক বলেন, ‘‘দুপুর বারোটা কুড়িতে শ্রীনিকেতন ট্রাফিক স্ট্যান্ড ছেড়েছি। গাড়ি আটকে পুলিশ এক চিরকুট দিল। তাতে ওই সময় লেখা ছিল। ফের হাটিকরে সেতুর কাছে গাড়ি আগলে, চিরকুট দেখতে চাইল পুলিশ। দুপুর একটা নাগাদ পৌঁছানোয় সতর্ক করল পুলিশ। গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুলিশ কর্মীরা।’’

জানা গিয়েছে, ওই রাস্তার পাশাপাশি বোলপুর মহকুমা একাধিক রাস্তায় দুর্ঘটনা রুখতে, দিন কয়েক আগে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুবিমল বাবু একটি বৈঠক করেন। বোলপুরের এসডিপিও অম্লান কুসুম ঘোষের তত্বাবধানে একাধিক থানার আইসি ও ওসিদের নিয়ে বৈঠক হয়। তার পর থেকেই, পরীক্ষামূলক ভাবে মোড়ে মোড়ে নজরদারি শুরু করে পুলিশ।

জেলার মধ্য দিয়ে কোনও জায়গায় জাতীয় সড়ক তো আবার কোনও জায়গায় রাজ্য সড়ক গিয়েছে। দুর্ঘটনা নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, তদন্তে দেখা গিয়েছে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকার কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাই পরীক্ষামূলক ভাবে ভারী যান চলাচলের গতি নিয়ন্ত্রণ করে দেখা হচ্ছে। সম্প্রতি গতি নিয়ন্ত্রণে না থাকার কারণে, এক পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে ইলামবাজারে। বেপকোয়া গতির কারণেই পর্যটক বোঝাই বাস উল্টে প্রাণহানি এবং জখমের ঘটনা ঘটেছে। ফি দিন জেলা জুড়ে বাইক দুর্ঘটনারও কোনও হিসেবে নেই। পুলিশ তদন্তে উঠে এসেছে, ভারী এবং মালবাহী গাড়ি চালকদের বেপরোয়া মনোভাব একাধিক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। এমন পরিস্থিতিতে, তাই ভারী এবং মালবাহী গাড়িকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পরীক্ষামূলক ভাবে পুলিশ এমন নজরদারি ব্যবস্থা চালু করেছে।

১৮৩ মোটার ভেহিকেল নিয়ম অনুযায়ী দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানোয় ৫০০ টাকা জরিমানা এবং ১৮৪ নিয়মে বিপজ্জনক গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে দু’হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধি রয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার বলেন, “দুর্ঘটনা রুখতে আমরা সব রকমের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রাথমিক ভাবে সচেতন করানো কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষামূলক ভাবে বোলপুর মহকুমা এলাকায় গাড়ির গতি বেঁধে, যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মোটর ভেহিকেল নিয়ম অনুযায়ী, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চড়া জরিমানা এবং শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement