economy

Economy: টাকা নয়, বছরভর কাজে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে ধান নেন পুরুলিয়ার এই গ্রামের ক্ষৌরকাররা

পৌষপার্বণের সময় মজুরি বাবদ ক্ষৌরকারদের হাতে ধান তুলে দেন গ্রামবাসীরা। এমন প্রথাই প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে এই গাড়াফুসরায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২২ ১৭:১২
Share:

ক্ষৌরকর্মের বদলে ধান দেওয়া হয় ক্ষৌরকর্মীদের। প্রতীকী চিত্র।

এ যেন নরুনের বদলে ধান। গ্রামবাসীদের বছরভর ক্ষৌরকর্ম করার বিনিময়ে টাকাপয়সা নয়, মজুরি হিসাবে ধান নেন ক্ষৌরকাররা। মানবসমাজের এই প্রাচীন প্রথা চলে আসছে পুরুলিয়া এক নম্বর ব্লকের গাড়াফুসরা এলাকায়। সারা বছর ধরে চুল-দাড়ি কাটার বিনিময়ে টাকাপয়সা নয়, একটি নির্দিষ্ট সময়ে পাওয়া যায় ধান। একটি পরিবারে কত জনকে ওই ক্ষৌরকার পরিষেবা দিয়েছেন তার উপরে নির্ধারিত হয় তিনি কতটা পরিমাণ ধান পাবেন। পৌষপার্বণের সময় মজুরি বাবদ এই ধান ক্ষৌরকারদের হাতে তুলে দেন গ্রামবাসীরা। এমন প্রথাই প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে এই গাড়াফুসরায়। ওই গ্রামের বাসিন্দা মহিম প্রামাণিকের কথায়, ‘‘বহু কাল থেকে আমাদের গ্রামে এই প্রথা চলে আসছে। এতে আমাদের যে খুব একটা রোজগার হয় তা নয়। তাই আমাদের সন্তানরা এই পেশায় আর আসতে চায় না। তারা অনেকে কাজের সন্ধানে ভিন্‌রাজ্যে চলে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা এই ধারা এখনও বজায় রেখে চলেছি। কারণ, আমরা এই কাজ না করলে গ্রামের মানুষজন কোথায় যাবেন?’’

Advertisement

সাধন মাহাতো নামে এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘ক্ষৌরকাজের বিনিময়ে আমরা ওঁদের ধান দিই তা ঠিক। ওঁরাও ধান পেয়ে খুশি হন। কারণ ওঁদের অনেকেরই চাষের জমি নেই। ওই ধান থেকে অনায়াসে তাঁরা চাল পেতে পারেন। আমাদের মধ্যে যাঁদের চাষের জমি নেই, তাঁরা অনেকে টাকা দেন।’’

পুরুলিয়ার জেকে কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এটা একটি বহু প্রাচীন প্রথা। আমাদের কৃষিভিত্তিক দেশে আগে কৃষিজ পণ্য দিয়েই বিনিময় প্রথা চলত। এখনও কিছু কিছু গ্রামে তার রেশ রয়ে গিয়েছে। তবে এই প্রথা ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement