ছবি সংগৃহীত।
দুবরাজপুর শহরে করোনা সংক্রমণ ক্রমেই বাড়ছে। বাজার লাগায়ো ওয়ার্ড তো বটেই, সংক্রমণ ছড়িয়েছে বাজারের কাছাকাছি থাকা থানার পুলিশকর্মী এবং ব্যাঙ্ক কর্মীদের মধ্যে। অথচ ঘিঞ্জি বাজারের এক জন ব্যবসায়ীও স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কোভিড টেস্টের জন্য এগিয়ে আসছেন না বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। সকলেই যাতে তাঁদের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করিয়ে নেন, সেটা নিশ্চিত করতে এ বার প্রয়োজনে কড়া পথে হাঁটতে চলছে কোভিড মোকাবিলায় গঠিত ব্লক টাস্ক ফোর্স। তাদের স্পষ্ট বার্তা, কোভিড পরীক্ষা করিয়ে নেগেটিভ রিপোর্ট দেখান ব্যবসায়ারী, নতুবা দোকান বন্ধ রাখুন।
আগামী সোমবার সব পক্ষকে নিয়ে এমনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে জানাচ্ছে টাস্ক ফোর্সের কর্তারা। বিডিও (দুবরাজপুর) অনিরুদ্ধ রায় বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবারই এই নিয়ে একটা বৈঠক ছিল। কিন্তু, পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন উপস্থিত না হওয়ায় সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েনি। করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রুখতে মিলিত সম্মতিতেই সোমবার এমন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’’ পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন দুবরাজপুর পুরপ্রশাসক পীযূষ পাণ্ডে এবং দুবরাজপুর থানার আইসি মাধব মণ্ডল। এখন ব্যবসায়ীদের উপরে বাকিটা নির্ভর করছে।
ঘটনা হল, এত দিন ছড়িয়ে ছিটিয়ে সংক্রমণ হলেও আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনক ছিল না দুবরাজপুর পুর-এলাকায়। ছবিটা বদলাতে শুরু করেছে গত সোমবার থেকেই। সেদিনই পুর-এলাকার ৮ জন কোভিড পজিটিভ রোগীর সন্ধান মেলে। যাঁদের মধ্যে গত সোমবার দুবরাজপুর বাজার লাগায়ো ৬ নম্বর ওয়ার্ডের একই পরিবারের ৬ জন ছিলেন। এক দিন পরে ওই ওয়ার্ডে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে ধরা পড়েন আরও ৫ রোগী। বৃহস্পতিবার বাজার লাগোয়া দুবরাজপুর থানার এক আধিকারিক এবং দুই সিভিক ভালান্টিয়ার কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ঢিল ছোড়া দূরত্বে থাকা একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের পাঁচ কর্মীও। সব মিলিয়ে ওই ঘিঞ্জি বাজারই প্রসাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রশাসনিক কর্তারা জানাচ্ছেন, দুবরাজপুর শহরের একমাত্র বাজারটি কয়েকটি গলির মধ্যেই সীমিত। সেখানেই বেচা কেনা হয় মনোহারি, মুদি, মাছ, আনাজ, ফল থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় সব সামগ্রী। অস্বাস্থ্যকর ঘিঞ্জি সেই বাজারের উপরে শহরের ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ তো বটেই, আশপাশের গাঁ গঞ্জের মানুষও নির্ভরশীল। এত মানুষের সংস্পর্শে যাঁরা আসছেন, দুবরাজপুর বাজারের সেই ব্যবসায়ীদের লালারসের নমুনা পরীক্ষা অতি প্রয়োজনীয়। কিন্তু প্রশাসনের দাবি, এ বিষয়ে প্রচার করে, অনুরোধ করেও ব্যবসায়ীদের থেকে সাড়া মেলেনি। অন্য দিকে, ব্যবসায়ীদের একাংশের বক্তব্য, প্রশাসন সঠিক ভাবে করোনা টেস্ট করালে আপত্তির কারণ নেই। তবে সামাজিক বয়কট এবং ব্যবসা মার খাওয়ার ভয়ে কেউ যেচে এই পরীক্ষা করাতে চাননি।