সন্ধ্যার মুখে সন্দেহজনক ভাবে এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখে বাসিন্দারা পাকড়াও করেছিলেন এক যুবককে। অসংলগ্ন কথাবার্তা শুনে ছেলেধরা সন্দেহে কয়েকজন মারধর করতে উদ্যোতও হন। ঠিক সেই সময়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে যায় সেই যুবককে। রবিবার উদ্ধার করা সেই যুবককে ঠিকানা খুঁজে শেষ পর্যন্ত বাড়ি ফিরিয়ে দিলেন ঝালদা থানার পুলিশ কর্মীরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার সন্ধ্যায় ঝালদা থানার সারম্ব গ্রামে এক যুবককে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে লোকজনের সন্দেহ হয়। তাঁকে ঘিরে ধরাতে তিনি অসংলগ্ন কথাবার্তা বলায় সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। রটে যায় ছেলেধরা ধরা পড়েছে।
পুলিশের এক আধিকারিক জানান, নোংরা পোশাক, উস্কোখুস্কো চুল, ভাল করে কথার জবাবও দিচ্ছে না দেখে সন্দেহ হয়। তবে উদ্ধার করার পরে প্রথম দিকে ওই যুবক চুপচাপ থাকলেও পরে এক সময়ে নিজের ঠিকানা জানান।
ঝালদা থানার আইসি ত্রিগুণা রায় ওই যুবককে পরিষ্কার করিয়ে নতুন পোশাক দিয়ে পেটভরে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন। তারপরে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বসেন তিনি।
তখনই ওই যুবক পুলিশকে জানান, তাঁর নাম কৃষ্ণ পাশোয়ান। বিহারের সমস্তিপুরের রোসড়া থানার আলমপুরে তাঁর বাড়ি। ইন্টারনেট দেখে সমস্তিপুরের রোসড়া থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
কিন্তু, আলমপুর গ্রামের হদিস প্রথমে তাঁদের কাছে মেলেনি। পরের দিন ওই থানা থেকে জানানো হয়, আলমপুর গ্রামটি বিভূতিপুর থানার আওতাধীন। সেই থানার ফোন নম্বর নিয়ে যোগাযোগ করা হয়। পাঠানো গয় কৃষ্ণের ছবিও।
বুধবার কৃষ্ণের বাবা নাগিনা পাশোয়ান ও জামাইবাবু অঞ্জিত পাশোয়ান ঝালদায় আসেন। নাগিনা জানান, ছেলের মানসিক সমস্যা রয়েছে। চিকিৎসাও চলছে। তিনি একটি খাবারের দোকানে কাজ করতেন। প্রায় মাস ছয়েক আগে এক দিন আচমকা উধাও হয়ে যান।
তাঁর কথায়, ‘‘আমরা অনেক জায়গায় খুঁজেছি, কোথাও পাইনি। আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। দু’দিন আগে সেখানকার পুলিশ আমাদের ওর ছবি দেখিয়ে জানতে পারি যে ঝালদায় রয়েছে। পুলিশ কর্মীদের অসংখ্য ধন্যবাদ।’’
কৃষ্ণ জানান, তিনি ট্রেনে চড়েছিলেন। তারপরে আর কিছু মনে নেই। যেখানে যা জুটত খেতেন। না পেলে উপোস। বাড়ি ফেরার আনন্দে চোখ ছলছল করে ওঠে কৃষ্ণের।