প্রতীকী ছবি।
শনিবার প্রথম দিন কোভিড টিকাকরণ ১০০ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়নি। বেশ কিছু সংশয় ও দ্বিধা ছিল স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের মনে। দ্বিতীয় দিন, সোমবার সেই সংশয় পিছনে ফেলে বীরভূম স্বাস্থ্যজেলার বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিন প্রদান কেন্দ্রে লক্ষ্যমাত্রা ১০০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেল। যদিও ছবিটা পুরোপুরি উল্টো রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলায়। তবে, সোমবার রাত পর্যন্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
প্রতিটি প্রতিষেধক কেন্দ্রে ১০০ শতাংশ গ্রাহকই যাতে প্রতিষেধক নেন, সে ব্যাপারে তৎপর ছিল স্বাস্থ্য দফতরও। এ দিন তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে বলে দাবি বীরভূম স্বাস্থ্যজেলার কর্তাদের। এখানে পাঁচটি টিকাপ্রদান কেন্দ্রের মধ্যে বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল ও ইলামবাজার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রথম দিনই ১০০ শতাংশের বেশি টিকাকরণ হয়েছিল। এ দিনও দুই হাসপাতাল নিজেদের সুনাম বজায় রাখল। বোলপুরে এ দিন বিকেল সাড়ে চারটে পর্যন্ত প্রতিষেধক নিয়েছেন ১৩৩ জন। অন্য দিকে ইলামবাজার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়েছেন ১২০ জন। আগের দিন নিয়েছিলেন ১১২ জন। লক্ষ্যপূরণে সক্ষম হয়েছে সাঁইথিয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল। এ দিন এখানে কোভিশিল্ড নিয়েছেন ১৩১ জন।
এ দিন প্রতিষেধক নেওয়ার পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি করেছে দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতালও। আগের দিন যেখানে মাত্র ১১ জন প্রতিষেধক নিয়েছিলেন, সেই সংখ্যাই সোমবার বিকাল সাড়ে চারটে পর্যন্ত বেড়ে হয়েছে ৭০। প্রথম দিন পিছিয়ে ছিল সিউড়ি জেলা হাসপাতাল। ত্রিশের গণ্ডি পার হয়নি।
এ দিন বিকেল সাড়ে চারটে পর্যন্ত ৬৭ জন করোনা যোদ্ধা প্রতিষেধক নিয়েছেন। সব মিলিয়ে আগের দিন যেখানে ৫৭ শতাংশ টিকাকরণ হয়েছিল, সেখানে বীরভূম স্বাস্থ্যজেলায় দ্বিতীয় দিন টিকাকরণ হয়েছে প্রায় ৮৩ শতাশ। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, প্রাথমিক দ্বিধাবোধ ও জড়তা যে আস্তে আস্তে কাটছে, এই তথ্যই তার প্রমাণ।
রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার তথ্য আবার অন্য কথা বলছে। শনিবার সেখানকার পাঁচটা কেন্দ্রে ১০০ করে ৫০০ জনকে প্রতিষেধক দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। নিয়েছিলেন ২৫৪ জন। এ দিন লক্ষ্যমাত্রা ১০০ বাড়লেও প্রতিষেধক নিয়েছেন মাত্র ১৮৭ জন। এই সংখ্যাও ছোঁয়া সম্ভব হয়েছে রামুপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের সৌজন্যে। মেডিক্যালের ৬০ জন পডু়য়া প্রতিষেধক নিয়েছেন। অথচ, স্বাস্থ্যকর্মীদের ভয় ভাঙাতে প্রথম দিনই মল্লারপুরে গিয়ে প্রতিষেধক নিয়েছেন রামপুরহাটের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান।
বীরভূম স্বাস্থ্যজেলায় এই ভাল ফলের নেপথ্যে রয়েছে কিছু কৌশল। প্রথম দিন কো-উইন অ্যাপ কাজ না করায় পরের ধাপে তালিকায় থাকা করোনা যোদ্ধাদের প্রত্যেকের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। খবর দেওয়া হয়েছিল সংসহত শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিকদেরও। কারণ প্রতিষেধক প্রাপকদের তালিকায় স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসক নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়াও রয়েছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকারা। প্রতিষেধক নেওয়ার সংখ্যাটা তাই অনেক বেড়েছে।
সূত্রের খবর, দুই স্বাস্থ্যজেলায় করোনা যোদ্ধা হিসাবে ২০ হাজার জনের নাম থাকলেও টিকা এসেছে ২২ হাজার ডোজ। প্রত্যেকে দু’টি করে ডোজ দিলে সংখ্যাটা ১১ হাজারের বেশি জনকে টিকা দেওয়া দেওয়া সম্ভব নয়। তাই কেউ প্রতিষেধক না নিলে পরের ধাপে থাকা করোনা যোদ্ধাদের ডাকাই যায়।