আশিস বেরিয়ে যেতেই জল দিয়ে বাড়ির উঠোন ধুচ্ছেন বগটুইয়ের এক বাসিন্দা। — নিজস্ব চিত্র।
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় চলে যাওয়ার পর বগটুইয়ের বাড়ি ধুয়ে পরিষ্কার করলেন পরিবারের লোকেরা। বগটুইকাণ্ডের এক বছর পূর্ণ হল মঙ্গলবার। সেই উপলক্ষে বগটুইয়ে দিনভর রাজনৈতিক নেতাদের ভিড়। কিন্তু তার মধ্যেই মিহিলাল শেখের বাড়ির এই দৃশ্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
বগটুইকাণ্ডে নিহতদের সম্মান জানাতে মঙ্গলবার তৃণমূলের পক্ষ থেকে কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই কর্মসূচিতে তাল কাটে শুরুতেই। আশিসকে বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেন নিহতদের আত্মীয়দের একাংশ। মুখের উপর বন্ধ করে দেওয়া হয় দরজা। পরে যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছিলেন, মিটে গিয়েছে সব ‘অভিমান’। কিন্তু ‘অভিমান’ যে মেটেনি তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে আশিস বেরিয়ে যাওয়ার পরেই।
মঙ্গলবার মিহিলাল শেখের দাদা বানিরুল শেখের বাড়িতে সমবেদনা জানানোর জন্য গিয়েছিলেন আশিস। কিন্তু বানিরুলের বাড়ির লোকেরা আশিসকে বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেন। এর পর বিকেলে সেই বাড়ির উঠোন জল দিয়ে ধুয়ে দেন মিহিলালের দিদি মেরিনা বিবি। তাঁর দাবি, বাড়ির উঠোন অপবিত্র হয়ে গিয়েছিল। তাই জল ঢেলে ধুয়ে দিলেন বাড়ি।
রামপুরহাট বিধানসভা কেন্দ্রের আওতায় বগটুই। ওই কেন্দ্রের বিধায়ক আশিস নিজে। স্থানীয়দের একাংশের ক্ষোভ নিয়ে আশিসের বক্তব্য, ‘‘এ বিষয়ে আমি বলতে পারব না। আমি শুনিনি। সকলে কি এই কথা বলছেন? এখানকারই বাসিন্দা ফটিক শেখ। তাঁর স্ত্রী মারা গিয়েছেন। ফটিক শেখ জলের আবেদন করেছিলেন কার কাছে? আপনারা খোঁজ নিন। তা হলেই হবে।’’ কিন্তু বগটুইয়ের সঙ্গে যে তাঁর দীর্ঘ সময় প্রত্যক্ষ ভাবে কোনও যোগাযোগ ছিল না তা স্বীকার করে নিয়েছেন রাজ্য বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার। তাঁর কথায়, ‘‘ঘটনার পর পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম যখন এসেছিলেন, তখন আমরা এখানে এসেছিলাম। কিন্তু তার পর যখন সিবিআই তদন্ত শুরু হয় তখন স্বাভাবিক ভাবেই এখানে আর আসিনি। সতর্ক ভূমিকা পালন করতে হয়েছিল। এই জন্য যে, যাতে কেউ কোনও কথা তুলতে না পারে।’’