আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে ক্ষোভ বগটুইতে। — ফাইল চিত্র।
এক বছর পূর্ণ হল বগটুইকাণ্ডের। ওই ঘটনায় নিহতদের সম্মান জানাতে মঙ্গলবার জোড়াফুল শিবিরের পক্ষে এক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কিন্তু সেই কর্মসূচিতে তাল কাটল। বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার তথা রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁদের বাড়িতে ঢুকতে বাধা দিলেন নিহতদের আত্মীয়দের একাংশ। যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, মিটে গিয়েছে সব ‘অভিমান’।
মঙ্গলবার বগটুইয়ে তৃণমূলের কর্মসূচি ছিল সকাল ১১টা থেকে। সেই মতো বগটুই যান জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁরা নিহতদের বাড়িতে যান। কিন্তু সকলকে ঢুকতে দেওয়া হলেও বাধা দেওয়া হয় রামপুরহাটের বিধায়ককে। নিহতের আত্মীয়দের এক জন বলেন, ‘‘আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে অ্যালাউ নয়।’’ এর পর আশিসের মুখের উপরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় গ্রিলের দরজা। বগটুইকাণ্ডে স্ত্রীকে হারিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা শেখলাল শেখ। অগ্নিকাণ্ডে জখম হয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী নাজমা। তাঁর দেহের ৬৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। সপ্তাহখানেক রামপুরহাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর মৃত্যু হয় তাঁর। সেই শেখলাল বলেন, ‘‘দিদি (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়)-র উপর আমাদের কোনও ক্ষোভ নেই। উনি আমাদের পাশেই আছেন। কিন্তু ওঁর (আশিস) উপর ক্ষোভ এই জন্য যে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির কোনও খোঁজখবর উনি গত এক বছরে নেননি।’’
বগটুই রামপুরহাট বিধানসভা কেন্দ্রের আওতায়। যে কেন্দ্রের বিধায়ক আশিস নিজেই। স্থানীয়দের একাংশের এই ক্ষোভ নিয়ে আশিসের বক্তব্য, ‘‘এ বিষয়ে আমি বলতে পারব না। আমি শুনিনি। সকলে কি এই কথা বলছেন? এখানকারই বাসিন্দা ফটিক শেখ। তাঁর স্ত্রী মারা গিয়েছেন। ফটিক শেখ জলের আবেদন করেছিলেন কার কাছে? আপনারা খোঁজ নিন। তা হলেই হবে।’’ তাঁরই কেন্দ্রের ওই এলাকার সঙ্গে তাঁর যে দীর্ঘ সময় প্রত্যক্ষ ভাবে যোগাযোগ ছিল না তা স্বীকার করে নিয়েছেন আশিস। তাঁর কথায়, ‘‘ঘটনার পর পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম যখন এসেছিলেন তখম আমরা এখানে এসেছিলাম। কিন্তু তার পর যখন সিবিআই তদন্ত শুরু হয় তখন স্বাভাবিক ভাবেই এখানে আর আসিনি। সতর্ক ভূমিকা পালন করতে হয়েছিল। এই জন্য যে, যাতে কেউ কোনও কথা তুলতে না পারে।’’
বীরভূমের তৃণমূল নেতা মলয় মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘ওঁদের অভিমান মিটে গিয়েছে। এখন আর কোনও অভিমান নেই। আমরা সকলে ওঁদের পাশে আছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং আছেন।’’ এর পর তৃণমূলের কর্মসূচিতে যোগ দেন শেখলাল।