লালনের মৃত্যুর তদন্তে সিআইডি। ফাইল চিত্র।
বগটুইকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লালন শেখের মৃত্যুর তদন্তে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে গেল সিআইডির একটি দল। শনিবার সকালে বগটুইয়ে ঢোকেন সিআইডি আধিকারিকরা। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ।
বৃহস্পতিবার থেকেই লালন শেখের রহস্যমৃত্যুর তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। শুক্রবারও বীরভূমের বগটুই গ্রামে গিয়েছিলেন সিআইডির আধিকারিকরা। সেখানেই মৃত লালনের বাড়ি। সিআইডি সূত্রে খবর, বগটুইয়ের গ্রামে ১০ জনকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন লালন। তাঁর স্ত্রী রেশমা বিবির বয়ানও শুক্রবার রেকর্ড করা হয়। এ বার লালনের শ্বশুরবাড়িতে গেলেন সিআইডির প্রতিনিধিরা।
লালনের স্ত্রী আগেই দাবি করেছেন, সিবিআই লালনকে ‘মেরে ফেলেছে’। ঘটনার রাতে রামপুরহাট হাসপাতালে কাঁদতে কাঁদতে রেশমা বলেছিলেন, ‘‘সিবিআই আজ আমার স্বামীকে গ্রামে নিয়ে এল। সিবিআই-ই মেরে দিল ওঁকে।’’ এফআইআরে তিনি কয়েক জন সিবিআই আধিকারিকের নামও দিয়েছেন। রেশমার অভিযোগ, তাঁর বাপের বাড়িতে এসে হুমকি দিয়েছিলেন সিবিআইয়ের কয়েক জন আধিকারিক। তাঁদের কাছে হার্ড ডিস্ক চাওয়া হয়। না দিতে পারায় ৫০ লক্ষ টাকা দিতে বলা হয়। এর পর আসবাবপত্র ভাঙচুর করে হুমকি দিয়ে ওই আধিকারিকরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান বলে অভিযোগ করেছেন রেশমা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বামীর মৃত্যুর পর রেশমা যে তিন পাতার অভিযোগ দায়ের করেছেন, তার ছত্রে ছত্রে সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে নালিশ রয়েছে। স্ত্রীর দাবি, সিবিআইয়ের ডিআইজি, এসপি এবং এক সিবিআই আধিকারিকের ‘নির্দেশে’ তাঁর স্বামীকে খুন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে, হুমকি ফোন, মারধর, বড় মাথাদের নাম বলানোর জন্য জোর করা— এ সব অভিযোগও করেছেন তিনি।
গত ২১ মার্চ রাতে তৃণমূল নেতা তথা রামপুরহাটের বড়শাল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখের খুনের পরেই বগটুই গ্রামে ১০ জনকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনাতে অন্যতম অভিযুক্ত লালন। রেশমার দাবি, ভাদুর ভাইয়েরাই তাঁর স্বামীকে ফাঁসিয়েছেন। এই সমস্ত অভিযোগের তদন্তে নেমেছেন সিআইডি আধিকারিকেরা।
সিআইডি ইতিমধ্যেই বগটুই হত্যাকাণ্ডে আর এক অভিযুক্ত তথা ভাদুর ভাই জাহাঙ্গির শেখকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। লালনের মতো জাহাঙ্গিরও সিবিআই হেফাজতে রামপুরহাটের অস্থায়ী ক্যাম্প অফিসে ছিলেন। তদন্তকারীদের দাবি, সোমবার লালনের মৃত্যুর দিন জাহাঙ্গির ক্যাম্পেই ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে কিছু সূত্র মিলতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।