BJP

সুকান্ত, মিঠুনের সামনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান বিজেপিকর্মীর! অস্বস্তিতে দল

সবে দলের রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষ হয়েছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং কোর কমিটির সদস্য মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে সেই বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২২ ২০:৫৭
Share:

মিঠুন চক্রবর্তী এবং সুকান্ত মজুমদার। ফাইল ছবি।

সবে দলের রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষ হয়েছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং কোর কমিটির সদস্য মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে সেই বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। তখনই উঠল ‘গো ব্যাক’ স্লোগান। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উদ্দেশে উড়ে আসা সেই স্লোগান আর কেউ নন, দিলেন তাঁর দলেরই এক কর্মী! তাঁর নাম দীপক চক্রবর্তী। সব দেখেশুনে মেজাজ হারিয়ে ফেলেন সুভাষ। স্লোগান দেওয়া ওই ব্যক্তির উপরে চড়াও হন বাকি কর্মী-সমর্থকেরাও। আর গোটা ঘটনায় বেজায় অস্বস্তিতে পড়তে হল সুকান্ত এবং মিঠুনকে।

Advertisement

বিজেপির বক্তব্য, শাসকদলই চক্রান্ত করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। যিনি গো ব্যাক স্লোগান দিয়েছেন, সেই দীপক বিজেপির কর্মীই নন বলে দাবি করেছেন সুভাষ। তাঁকে মারধরের অভিযোগও অস্বীকার করেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। শাসক দলের পাল্টা দাবি, ওই ব্যক্তির সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগের দলের তৃণমূল স্তরের সাংগঠনিক শক্তি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতেই রাঢ়বঙ্গ সফরে বেরিয়েছেন মিঠুন, সুকান্তেরা। সেই সূত্রেই বৃহস্পতিবার তাঁদের বাঁকুড়ায় আসা। সেখানে গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের দুর্লভপুর মোড়ের একটি বেসরকারি লজে দলের বিজেপির মণ্ডল এবং জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। ছিলেন সুভাষও। বেলা ২টো নাগাদ বৈঠক শেষে তাঁরা বাইরে বেরোতেই সুভাষকে লক্ষ্য করে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিতে থাকেন দীপক। ঘটনার আকস্মিকতায় অস্বস্তিতে পড়ে যান দলের শীর্ষ নেতৃত্ব-সহ উপস্থিত সকলেই। অভিযোগ, এর পরেই বিজেপি কর্মীদের কয়েক জন দীপককে মাটিতে ফেলে চড়-থাপ্পড়ও মারেন। মেজাজ হারিয়ে আঙুল উঁচিয়ে দীপককে শাসানোর অভিযোগ উঠেছে সুভাষের বিরুদ্ধেও।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে গো ব্যাক স্লোগান দেওয়া দীপকের বাড়ি গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের নিধিরামপুরে। তিনি নিজেকে বিজেপি কর্মী বলেই দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, সুভাষকে নির্বাচনে জেতানোর জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন তিনি। কিন্তু ভোটের পর এলাকার কোনও উন্নয়ন করেননি সুভাষ। তাই তিনি বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। দীপকের কথায়, ‘‘আমি আগেও বিজেপি কর্মী ছিলাম। আজও তা-ই আছি। সুভাষ সরকারকে জেতানোর জন্য অনেক খেটেছি। কিন্তু জেতার পর সুভাষ এলাকার জন্য কোনও কাজ করেননি। তিনি যাতে এলাকায় দ্বিতীয় বার না আসেন, তাই গো ব্যাক স্লোগান দিয়েছি।’’

সুভাষের পাল্টা দাবি, তৃণমূলই পাঠিয়েছে দীপককে। তাঁর কথায়, ‘‘ওই লোকটা বিজেপির কেউ নন। ওঁর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্কই নেন। তৃণমূলই ওঁকে মদ খাইয়ে পাঠিয়েছে। শাসকদলের প্ররোচনায় যে ভাবে ওই ব্যক্তি চিৎকার চেঁচামেচি করছিলেন, তাতেই রেগে গিয়েছিলেন আমাদের কর্মীরা। তবে কাউকে মারধর করা হয়নি।’’ শাসকদলকে কটাক্ষ করে সুভাষের মন্তব্য, ‘‘রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী-সহ অনেকেই জেলে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে মানুষের কাছে মুখ দেখাতে পারছে না তৃণমূল। তাই এই নোংরা রাজনীতি করছে।’’

তৃণমূলও পাল্টা বিঁধেছে সুভাষকে। দলের গঙ্গাজলঘাটি দু’নম্বর ব্লকের সভাপতি নিমাই মাজি বলেন, ‘‘সাংসদ হিসাবে সুভাষ সরকার এবং বিধায়ক হিসাবে চন্দনা বাউড়ি চূড়ান্ত ব্যর্থ। তাই বিজেপির কর্মীরাই সাংসদকে গো ব্যাক স্লোগান দিয়েছেন বলে শুনেছি। দীপক চক্রবর্তী নামে ওই ব্যক্তি তৃণমূলের কেউ নন। শাসকদলের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement