Bishnupur

বিষ্ণুপুরের পথে বিজেপি

মিছিল থেকে শ্যামবাবুর বিরুদ্ধে স্লোগান না দেওয়া হলেও, নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি, তাঁরা আসলে শ্যামবাবুকে দলে নেওয়ার প্রতিবাদেই এই মিছিল করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

 বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:২১
Share:

বাইক-মিছিলে অনেকের নেই মাস্ক, হেলমেট। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।

বিজেপির বিষ্ণুপুরের নেতা-কর্মীরা শ্যাম মুখোপাধ্যায়কে দলে নেওয়া নিয়ে যতই বিরোধিতা করুন, শহরের প্রাক্তন পুরপ্রধান কিন্তু বসে নেই। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই শ্যামবাবু অনুগামীদের নিয়ে বিষ্ণুপুর শহরে ছোট ছোট এলাকা ঘুরে জনসংযোগ করে বেড়াচ্ছেন। অন্য দিকে, শ্যাম-বিরোধী বিজেপি কর্মীরাও শহরের বিভিন্ন জায়গায় তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান ও বিক্ষোভ মিছিল করছেন।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হরকালী প্রতিহারের নেতৃত্বে বিষ্ণুপুর শহরে মোটরবাইক মিছিল করলেন নেতা-কর্মীরা। মিছিল থেকে শ্যামবাবুর বিরুদ্ধে স্লোগান না দেওয়া হলেও, নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি, তাঁরা আসলে শ্যামবাবুকে দলে নেওয়ার প্রতিবাদেই এই মিছিল করেছেন।

মিছিলের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অবশ্য দাবি করছেন, ‘‘প্রকৃত গণতন্ত্রের দাবিতে এবং তৃণমূলের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমাদের এই বাইক মিছিল।’’ যদিও বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরার পাল্টা দাবি, ‘‘রাজ্যে গণতন্ত্র রয়েছে বলে বিরোধীরা যা খুশি বলতে পারছেন। শ্যামবাবু নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত। তা না হলে তাঁর নতুন দলের সঙ্গে বেরোতেন। বিজেপির আদি ও নব্য এই দুই গোষ্ঠী এ বার নিজেদের মধ্যে মারাধারি করবে, আর বিষ্ণুপুরবাসীকে ভুগতে হবে।’’ শ্যামবাবু অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে কে, কী বললেন, তা তিনি গুরুত্ব দিতে নারাজ।

Advertisement

তৃণমূলে ইস্তফা দিয়ে শ্যামবাবু কয়েক জন বিদায়ী কাউন্সিলরকে নিয়ে শনিবার মেদিনীপুরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় বিজেপিতে যোগ দেন। তিনি কেন বিজেপিতে যোগ দিলেন, তা জানাতে পরের দিন থেকেই শহরে জনসংযোগে নামেন। এ দিকে, শ্যামবাবু তৃণমূলে ইস্তফা দেওয়ার পর থেকেই বিষ্ণুপুর শহরের বিজেপি কর্মীরা তাঁকে দলে নেওয়া যাবে না বলে দাবি তুলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। গত ক’দিনে দু’পক্ষই পথে নামছেন।

তার মধ্যে এ দিন শহর জুড়ে প্রায় ৫০০ বিজেপি কর্মীর মোটরবাইক মিছিল বেরোয়। ওই মিছিলে ছিলেন বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার প্রতিটি মণ্ডল সভাপতি-সহ কর্মীরা। শহর পরিক্রমা করে বাইক মিছিল হাজির হয় পানশিউলি গ্রামের কাছে। সেখানে মধ্যাহ্নভোজনের আয়োজন করা হয়েছিল।

হরকালীবাবু বলেন, “শ্যামবাবু সম্পর্কে আমার কিছু বলার নেই। তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হাত ধরে বিজেপি পরিবারে এসেছেন। সংগঠনের বিষয়ে এখনও আমার সঙ্গে কারও কথা হয়নি।’’ যদিও কারও নাম না করে বিজেপির বিষ্ণুপুর সংগঠনিক জেলা সম্পাদক পার্থ রক্ষিত অভিযোগ করেন, “বিষ্ণুপুরকে দীর্ঘদিন ধরে যিনি দুর্নীতির আঁতুড়ঘর করে রেখেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ-বিক্ষোভ হওয়াটাই স্বাভাবিক। এই বাইক মিছিল থেকেও তাঁর বিরুদ্ধে কর্মীরা ধিক্কার জানিয়েছেন।’’

শ্যামবাবুর অবশ্য সাফ জবাব, “বিজেপিতে এসে সংগঠন মজবুত করার কাজ শুরু করে দিয়েছি। কে, কী বললেন, তা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। বিষ্ণুপুর বিধানসভার মানুষ আমার সঙ্গেই আছেন।’’

এ দিনের মিছিলে অনেকেই মাস্ক ও হেলমেট পরেননি বলে অভিযোগ। যদিও বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতির দাবি, ‘‘প্রায় সবাই মাস্ক ও হেলমেট পরেছিলেন। এক-দু’জন হয়তো পরেননি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement