প্রতীকী ছবি
দলীয় প্রশিক্ষণ শিবিরে ধুন্ধুমার বাধল বিজেপির দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। মারপিটে জখম হলেন পাঁচ জন। তা গড়াল থানাতেও। শুক্রবার পুরুলিয়ার বরাবাজারের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে তদন্তে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপির বরাবাজার মণ্ডল সভাপতি লবসেন বাস্কে লিখিত অভিযোগে তাঁদের সভা ভণ্ডুল করার জন্য বরাবাজারের তুমড়াশোল গ্রামের বিজেপি নেতা জয়দেব গোস্বামী-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। পাল্টা অভিযোগে জয়দেববাবু দাবি করেছেন, তাঁরা সভা করার সময়ে লবসেনবাবুর লোকজন তাঁদের উপরে চড়াও হয়ে মারধর করেন। দু’পক্ষের আহত পাঁচ জনকে বরাবাজার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়।
ওই ঘটনাকে ঘিরে জেলার রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। তৃণমুলের বরাবাজার ব্লক সভাপতি লম্বোদর মাহাতো দাবি করেন, ‘‘বিজেপির নেতা-কর্মীরা যে বিন্দুমাত্র অনুশাসন মেনে চলেন না, তা আরও এক বার প্রমাণিত হল।’’ বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিবেক রঙ্গা বলেন, ‘‘দলীয় সূত্রে জেনেছি, বরাবাজারে প্রশিক্ষণ শিবিরে মারপিট হয়েছে। যে বা যাঁরা এই কাণ্ডে জড়িত থাকুক, তাঁদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমাদের দলে অনুশাসন যথেষ্ট রয়েছে। সে জন্য দোষীদের শাস্তি হবে। তবে তৃণমূলের মুখে অনুশাসনের কথা মানায় না।’’
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বরাবাজারের এ-টিম গ্রাউন্ডের কমিউনিটি হলে ‘দীনদয়াল উপাধ্যায় প্রশিক্ষণ শিবির’-এর আয়োজন করা হয়েছিল। বরাবাজার মণ্ডল কমিটির ৬১ জন এবং জেলা স্তরের পদাধিকারী মিলিয়ে প্রায় একশো জন উপস্থিত ছিলেন। বরাবাজারের ওই শিবিরের বলে দাবি করে একটি ভিডিয়ো ফুটেজ় (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যাচ্ছে, হলঘরের মধ্যে কিল, চড়, লাথি চলছে। দলীয় পতাকা খুলে নিয়ে ঝান্ডা উঁচিয়েও অনেককে চড়াও হতে দেখা যায়। আতঙ্কে দলের মহিলা কর্মীরা ছুটে বেরিয়ে যাচ্ছেন। এক দল আবার দু’পক্ষকে থামানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
শিবিরে উপস্থিত থাকা এক জেলা নেতা বলেন, ‘‘শিবির শুরু হওয়ার মুখে তুমড়াশোলের বাসিন্দা জয়দেব গোস্বামী কয়েকজন যুবককে সঙ্গে নিয়ে সোজা মঞ্চে উঠে তাঁরা কেন ডাক পাননি, তা নিয়ে বচসা শুরু করে দেন। পরিস্থিতিতে তেতে উঠলে দু’পক্ষের মধ্যে মারপিট শুরু হয়। গন্ডগোল থামানোর জন্য আবেদন করেও লাভ হয়নি।’’
দলের অন্দরের খবর, লবসেনবাবু ও জয়দেববাবুর অনুগামীদের ‘দ্বন্দ্ব’ অনেক দিনের। তবে এ দিন তা ‘মাত্রাছাড়া’ আকার নেয়। এ নিয়ে ফোন করা হলে লবসেনবাবু মন্তব্য করতে চাননি। তবে জয়দেববাবুর দাবি, ‘‘দলের কর্মসুচিতে যোগ দিতে গিয়েছিলাম। সেখানে লবসেনবাবুর ছেলেরা লাঠি দিয়ে আমাদের পিটিয়েছে।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘কী ঘটেছে, দলীয় স্তরে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’