প্রতীকী ছবি।
জনসংযোগের নতুন কৌশল— ‘মুষ্টিভিক্ষা’ কর্মসূচির সূচনা করে গিয়েছেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। এ বার সেই কর্মসূচি শুরু হতে চলেছে বীরভূমের প্রতিটি বুথে বুথেও।
বিজেপি সূ্রে খবর, কী ভাবে তা হবে এ ব্যাপারে বুধবার ভার্চুয়াল বৈঠক হয় জেলার সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের। এ বার মণ্ডলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে দ্রুত কর্মসূচি শুরু হবে। বিজেপির কিসান মোর্চার জেলা সভাপতি দীনবন্ধু মণ্ডল জানান, ‘‘কৃষির সঙ্গে যু্ক্ত প্রতি বুথে ১০০টি করে পরিবারে পৌঁছে যাওয়াই লক্ষ্য দলের।’’ শুধু তাই নয়, বিজেপি সূত্রের খবর, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের একটা করে চিঠিও দেওয়া হবে।
বিজেপি সূত্রে খবর, প্রতিটি বাড়ি গিয়ে কৃষকদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ‘কিসান সম্মান নিধি’ প্রকল্প ও কৃষি আইন নিয়ে বোঝানোর পরে বাড়ি থেকে এক মুঠো চাল ভিক্ষা করে আনা হবে। সেই চাল দিয়েই এক দিন এলাকার কৃষকদের নিয়ে বনভোজন হবে এলাকায়। ভিক্ষাগ্রহণের আড়ালে ব্যক্তি বা পরিবারটির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরিই উদ্দেশ্য বিজেপির। সেটাই এ বার শুরু হচ্ছে জেলার ৩০২১টি বুথে। জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলছেন, ‘‘এই ব্যাপারে রাজ্যের দায়িত্ব প্রাপ্ত লকেট চট্টোপাধ্যায় জেলায় আসবেন। কর্মসূচি খতিয়ে দেখতে লাভপুরে আসার কথা তাঁর। তবে দিন স্থির হয়নি।’’
এমনিতেই বিধানসভা নির্বাচনে বাংলাকে পাখির চোখ করেছে বিজেপি। জনসংযোগ বৃদ্ধি থেকে শুরু করে বুথ স্তরের সংগঠন মজবুত করতে নানা কর্মসূচি নিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্ব। তার মধ্যেই নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নাজেহাল কেন্দ্রীয় সরকার। প্রবল সমালোচিত বিজেপি। এমনই এক পরিস্থিতিতে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে কৃষক সমাজের মন ছুঁতে পূর্ব বর্ধমানের মতো কৃষিপ্রধান জেলাকেই বেছেছিলেন নাড্ডা। মোদী সরকার কৃষকদের কত আপন, সেটা জানানোর পাশাপাশি সম্পর্ক তৈরিও লক্ষ্য ছিল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির।
বিজেপির দাবি, এতে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। বর্ধমানে কর্মসূচির শেষ গৃহস্থের দেওয়ালে সেঁটে দেওয়া হয়েছিল বিজেপি-র স্টিকার। এখানেও সেটাই করা হবে। তার সঙ্গে ওই কৃষকের নাম, ফোন নম্বর নিয়ে আসবেন বিজেপি নেতাকর্মীরা। সেটা রাজ্যে পাঠাবেন নেতারা। তবে হিন্দুদের পাশাপাশি লক্ষ্য থাকবে সম সংখ্যক মুসলিম কৃষক পরিবারে পৌঁছে যাওয়ারও।
দীনবন্ধুবাবু বলছেন, ‘‘১২ তারিখ যুব দিবস ছিল। ওই দিন মুষ্টিভিক্ষার প্রতীকী কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। সেখানও মুসলিম পরিবারে পৌঁছে গিয়েছিলাম আমরা। জেলা জুড়েও সেই কাজটাই করতে চাইব।’’ গোরুয়া শিবিরের দাবি, বুথের সংগঠন মজবুত করা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে বুথে বুথে ইতিমধ্যেই ভিত্তি তৈরি হয়েছে। মুষ্টিভিক্ষা কর্মসূচি সফল হলে সেটা আরও মজবুত হবে।
এমন কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছেন জেলা সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘কৃষকদের কাছে দাঁড়াবার মুখ বিজেপির নেই। একটি ফ্লপ কর্মসূচি হবে। নিজেদের শেষে কর্মীদের বাড়িতে চা খেয়ে ফিরে যাবে।’’