বাঁকুড়ায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়। নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাঁকুড়ায় সাংগঠনিক বৈঠকের জন্য তোড়জোড় পড়ে গিয়েছে বিজেপির জেলা নেতা-কর্মীদের মধ্যে। রবিবার বাঁকুড়ায় অমিত শাহের বৈঠকের প্রস্তুতি দেখতে আসেন দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়, বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন, কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ প্রমুখ।
শনিবার দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানান, আগামী ৫ নভেম্বর অর্থাৎ বৃহস্পতিবার শাহ বাঁকুড়ার রবীন্দ্রভবনে দলীয় বৈঠক করবেন। সেখানে থাকার কথা দলের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বর্ধমান, বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া এবং হুগলি জেলা নেতৃত্বের। দলীয় নেতৃত্ব জানান, বাঁকুড়ার রবীন্দ্র ভবনে শাহের বৈঠকের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে।
রবিবার পর্যন্ত পাওয়া খবরে, ওই দিন বিজেপির বাঁকুড়ার রবীন্দ্রভবন পাওয়া নিয়ে চূড়ান্ত কিছু হয়নি। এ দিন দলের প্রস্তুতি বৈঠকে যোগ দেওয়ার পরে মুকুলবাবু সাংবাদিকদের বলেন, “অমিত শাহ বাঁকুড়ায় সীমিত কিছু দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করবেন। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে মনে হচ্ছে হয়তো রবীন্দ্রভবনে বৈঠক করার অনুমতি আমরা পেয়ে যাব। যদি না পাই, তখন অন্য ব্যবস্থা করা হবে। দেখা যাক কী হয়।”
রবীন্দ্রভবন পাওয়া নিয়ে দলের অন্দরে দোলাচল কেন? বিজেপির জেলা নেতৃত্বের অভিযোগ, গত লোকসভা ভোটের মুখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দলীয় সভার অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে বিস্তর টালবাহানা করেছিল বাঁকুড়া প্রশাসন। বাধ্য হয়ে যোগীর সভা বাতিল করেন জেলা নেতৃত্ব। নরেন্দ্র মোদী অবশ্য সভা করেছিলেন। বিজেপি নেতৃত্বের আরও অভিযোগ, বছর খানেক আগে দলীয় একটি কর্মসূচি রবীন্দ্রভবনে করার জন্য প্রশাসনিক ছাড়পত্র মিলেছিল। যদিও কর্মসূচির দিনে প্রশাসন অনুমতি বাতিল করে দেয়। তাই এ বার প্রশাসনের কাছ থেকে রবীন্দ্রভবন পাওয়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত কিছু না হওয়া পর্যন্ত ভরসা করতে নারাজ বিজেপির অনেক কর্মী।
রবীন্দ্রভবনে অনুষ্ঠানের অনুমতি দেন মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর)। মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর) সুদীপ্ত দাস এ দিন সন্ধ্যায় বলেন, “৫ নভেম্বর রবীন্দ্রভবন ‘বুক’ করার জন্য বিজেপির তরফে কোনও আবেদন আমি এখনও পাইনি।”
বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রের অবশ্য দাবি, “শুক্রবারই আমরা বাঁকুড়ার এসডিও-কে ই-মেলের মাধ্যমে ৫ নভেম্বর রবীন্দ্রভবন ‘বুক’ করার আবেদন জানিয়েছি। আমরা নিয়ম নীতি মেনেই রবীন্দ্রভবন ‘বুক’ করার জন্য আবেদন করেছি। প্রশাসন যদি তৃণমূলের নির্দেশে অনুমতি না দেয়, তাহলে আমরাও পাল্টা আন্দোলনে নামব।” জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা বলেন, “তৃণমূল গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। প্রশাসনিক কাজে হস্তক্ষেপ আমরা করি না।”