Nimai Das

আত্মসমর্পণ করে দলবদলের ইঙ্গিত

তবে বহুবার দলবদলে অভ্যস্ত পাড়ুইয়ের ওই নেতা আত্মসমর্পণের সঙ্গেই জেলায় রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:২২
Share:

—ফাইল চিত্র।

আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন প্রায় দেড় বছর আগে একটি মাদক মামলায় অভিযুক্ত বিজেপি নেতা নিমাই দাস। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সোমবার সিউড়ির বিশেষ আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাঁকে ৭ দিনের জন্য জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে বলে জানান পাবলিক প্রসিকিউটর মলয় মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

তবে বহুবার দলবদলে অভ্যস্ত পাড়ুইয়ের ওই নেতা আত্মসমর্পণের সঙ্গেই জেলায় রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। এ দিন আদালতে এসে নিমাই দাবি করেন, তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু, বিজেপি-ই তাঁকে ফাঁসিয়েছে। তাই তৃণমূলে ফিরতে চান। জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশেই তিনি আত্মসমর্পণ করেছেন বলেও নিমাইয়ের দাবি।

গত বছর লোকসভা ভোটের পরে মে মাসে বিজেপি-তে যোগ গিয়েছিলেন পাড়ুইয়ে এক সময়ের দাপুটে তৃণমূল নেতা নিমাই দাস। তবে, সেটাই প্রথম দল বদল ছিল না। প্রথমে কংগ্রেস পরে, ১৯৯৮ সালে তৃণমূল যোগ দেন তিনি। ২০১১ সালের পর থেকেই নিমাইকে নিয়ে দলের মধ্যেই মনোমালিন্য তৈরি হয়। ২০১৪ সালের জুলাইয়ে বিজেপি-র তৎকালীন জেলা সভাপতি, দুধকুমার মণ্ডলের হাত ধরে বিজেপি-তে আসেন নিমাই-সহ ৫০০ জন তৃণমূল কর্মী। পরের বছর জুলাইয়ে অনুব্রত মণ্ডলের হাত ধরে আবার তৃণমূলে ফিরে আসেন। তবে সেই সখ্যও বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ২০১৬ সালের পর থেকে শাসকদলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে নিমাইয়ের, যখন তাঁর স্ত্রী শঙ্করী গড়াইয়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে তাঁকে কসবা পঞ্চায়েতের প্রধান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে নিমাইয়ের দল বদলের কিছুদিন পরেই ইলামবাজার থানা এলাকায় একটি গাড়িতে করে গাঁজা পাচারের সময় চার দুষ্কৃতী ধরা পড়ে। সেই দলে ছিল কুখ্যাত অপরাধী গোপাল শেখ। মাদক কারবারে নিমাই যুক্ত বলে গোপালের শেখ পুলিশের কাছে দাবি করেছিল। পুলিশের দাবি, তল্লাশিতে নিমাইয়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ১১ কিলো গাঁজা!

সেই থেকেই পুলিশ নিমাইকে খুঁজছিল। এর মাঝে কলকাতা হাইকোর্ট জামিনের আবেদন খারিজ হয় নিমাইয়ের। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টে বিশেষ লিভ পিটিশনও নামঞ্জুর হয়। তবে, ডিভিশন বেঞ্চ নভেম্বরের ১৭ তারিখ নিমাইকে চার সপ্তাহের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পমণের নির্দেশ দেয়। সদলবলে নিমাই এ দিন সিউড়ি আদালতে আসেন। তবে পুলিশ সঙ্গীদের আদালতে প্রবেশে বাধা দেয়। সরকারি আইনজীবী মলয়বাবু বলেন, ‘‘চার সপ্তাহের সময় সীমা মঙ্গলবারই শেষ হয়ে যাচ্ছিল।’’ আদালত চত্বরে নিমাইয়ের উল্টো দাবি শুনে বিজেপি-র জেলা শ্যামাপাদ মণ্ডল বলছেন, ‘‘আদালতে উনি যা বলেছেন, তা ওঁর মুখের কথা, মনের কথা নয়। আসলে তৃণমূল ও কথা বলাতে বাধ্য করেছে।’’ তাঁর অভিযোগ, যে ভাবে পুলিশ দিয়ে বিজেপি কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে মানসিক অত্যাচার করে শাসকদল, নিমাইয়ের ক্ষেত্রেও সেটা করা হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সহসভাপতি অভিজিৎ সিংহের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এটাই বলব, নিমাইবাবুর মোহভঙ্গ হয়েছে। বিজেপি খারাপ পথে চালিত করেছিল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement