—প্রতীকী চিত্র।
সদস্য সংগ্রহের সময়সীমা ছিল ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। সেই সময়সীমা পনেরো দিন বাড়িয়ে ডিসেম্বরের ১৫ তারিখ পর্যন্ত করেছে বিজেপি। সদস্য সংগ্রহের নিরিখে পরিসংখ্যানগত ভাবে দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলা ভাল অবস্থানে থাকলেও, লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেক পিছিয়ে। আরও পিছিয়ে বোলপুর সাংগঠনিক জেলা।
জেলা বিজেপি সূত্রের খবর, বীরভূম সাংগঠনিক জেলায় ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৪৬ হাজার সদস্য হয়েছেন। সেখানে বোলপুর সাংগঠনিক জেলায় ওই দিন পর্যন্ত সদস্য সংখ্যা ছিল ১৯ হাজারের কাছাকাছি। তার পরে চার দিন পেরিয়েছে। পরিসংখ্যান কিছুটা উন্নত হয়েছে। তবে, দলের ঠিক করে দেওয়া লক্ষ্যের ধারেকাছে নেই বলেই সূত্রের খবর। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সদস্য সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধনে বাংলায় এসে দলকে এক কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে গিয়েছিলেন। বীরভূমের দু’টি সাংগঠনিক জেলার ৭৩টি বুথের জন্য সদস্য করার লক্ষ্যমাত্রা সাত লক্ষেরও বেশি।
বিজেপির দু’টি সাংগঠনিক জেলা ১ লক্ষ করে সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। তবে, সেই সংখ্যাও ছোঁয়া যাবে কি না, দলের অন্দরেই সংশয় রয়েছে। সূত্রের খবর, বোলপুর সাংগঠিনক জেলায় নানুর ও কেতুগ্রামে সদস্য সংগ্রহের শোচনীয় অবস্থা। ২৮ তারিখ পর্যন্ত সদস্য সংখ্যা দু’হাজারেরর কম ছিল। তবে,বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সিউড়ি এবং দুবরাজপুরে পরিস্থিতি ভাল।দু’টি বিধানসভা এলাকাতেই সদস্য সংখ্যা ১০ হাজারের গণ্ডী ছাড়িয়ে গিয়েছে।
বীরভূম সাংগঠনিক জেলার এক নেতার দাবি, ইতিমধ্যেই ২০১৯ সালের সদস্য সংগ্রহের পরিসংখ্যান ছাপিয়ে গিয়েছে। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘২০১৯ সালে আমরা যে সংখ্যক সদস্য করতে পেরেছিলাম, এখনও পর্যন্ত তা দ্বিগুণেরও বেশি ছাপিয়ে গিয়েছে।” বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডলেরও দাবি, ‘‘প্রথম দিকে অনেকটাই পিছিয়েছিলাম। এখন সদস্য সংগ্রহের গতি বেড়েছে। ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সদস্য সংগ্রহের সংখ্যা অনেক বাড়বে।’’
বিজেপির একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে সদস্য সংগ্রহ অভিযানে বোলপুর থেকে প্রায় ৮৩ হাজার মিস্ড কল পেয়েছিল বিজেপি। প্রকৃত সদস্য হয়েছিলেন প্রায় ২৬ হাজার। অন্য দিকে বীরভূম সাংগঠনিক জেলা থেকে মিস্ড কল গিয়েছিল প্রায় ৫৭ হাজার। প্রকৃত সদস্য করা গিয়েছিল প্রায় ১৯ হাজার জনকে। এ বারেও মিস্ড কল আছে। তবে, আদতে প্রত্যেক সদস্যের জন্য ডিজিটাল ফর্ম বা আবেদনপত্র পূরণ করতে হচ্ছে। যাতে এক জনের তথ্যপঞ্জি দলের কাছে থাকে। সদস্যের নাম, ঠিকানা, কোন বিধানসভা এলাকার কোন ব্লকের কোন বুথে বসবাস করেন ইত্যাদি তথ্য থাকছে।
ডিজিটাল মাধ্যমে সড়গড় নেতা-কর্মীর অভাবের জন্য সদস্য সংগ্রহে ভাটা পড়েছে বলে মত দলের নেতাদের একাংশের। অন্য অংশের মতে, ইচ্ছুক ব্যক্তিদের কাছে গিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করাতে যাঁদের উপরে ভরসা করে সদস্য সংগ্রহের অভিযান, বিজেপির সেই নেতা-কর্মীদের অনেকেই কার্যত নিষ্ক্রিয়। ফলে, কাজে গতি আসছে না। বিজেপির একাধিক নেতার দাবি, দলের সমর্থক ও ভোটদাতা হলেও শাসকদলের ‘ভয়’ এবং লক্ষ্মীর ভান্ডার-সহ নানা জিজ্ঞাসা থেকে পিছিয়ে যাচ্ছেন অনেকেই।