প্রতীকী চিত্র।
বাড়ির পিছনে গাছ থেকে উদ্ধার হল বিজেপির এক যুব নেতার দেহ। তাঁর মুখে রুমাল গোঁজা থাকায় মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। শুক্রবার সকালে পুরুলিয়ার কাশীপুর থানার জোড়থোল গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম হরনাথ মণ্ডল (২৬)। পরিবার এবং বিজেপি নেতৃত্ব এই মৃত্যু আত্মহত্যা বলে মানতে নারাজ। তাঁরা মৌখিক ভাবে তদন্তের দাবি জানালেও সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় অভিযোগ জানায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে দেহ ময়না-তদন্তে পাঠায় পুলিশ।
বিজেপির যুব মোর্চার মণ্ডল সম্পাদক হরনাথের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পেয়ে এ দিন তাঁর বাড়িতে যান দলের পুরুলিয়ার প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী থেকে বৃন্দাবন মণ্ডল, রাজেশ চিন্না, বিরিঞ্চি মাহাতো প্রমুখ নেতা।
পরিবার সূত্রে খবর, হরনাথের ছোট ভাই অসুস্থ। চিকিৎসা করাতে এক মাস দক্ষিণ ভারতে ছোট ভাইকে নিয়ে গিয়েছিলেন হরনাথ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভাইকে নিয়ে সেখান থেকে বাড়িতে ফেরেন। তাঁর কাকা জিতেন মণ্ডল জানান, রাতে খাওয়া সেরে নিজের মোটরবাইকে পাশের ধতলা গ্রামে নবকুঞ্জের আসরে কীর্তন শুনতে গিয়েছিলেন হরনাথ। সেখানে আলাদা ভাবে গিয়েছিল হরনাথের বাবাও মনসারাম মণ্ডল-ও। তবে তিনি এ দিন ভোরে বাড়ি ফেরেন।
মৃতের পরিবারের দাবি, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বাড়ির পাশে একটি মোটরবাইক আসার শব্দ তারা শুনতে পায়। ভেবেছিল, হরনাথ এসে নিজের ঘরে শুয়ে পড়েছে। এ দিন সকালে বাড়ি থেকে প্রায় আড়াইশো মিটার দূরে নিমগাছের ডালে তাঁর নিজেরই গামছায় গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত দেহ দেখা যায়। মুখে তাঁর নিজের রুমালই গোঁজা ছিল। অদূরে রাখা ছিল মোটরবাইকটি। তবে চাবি মেলনি। ফোন পাওয়া গিয়েছে।
এ দিকে হরনাথ কোনও ভাবেই আত্মহত্যা করতে পারেন না বলে দাবি তাঁর পরিজনদের। তাঁর কাকা জিতেন বলেন, ‘‘ভাইপোর মৃত্যুর পিছনে অবশ্যই রহস্য আছে। আত্মহত্যা করার মতো কোনও পরিস্থিতি বা কারণ ছিল না।আমরা প্রকৃত তদন্ত চাইছি।’’
কোনও রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগ না করলেও বিজেপি সাংসদ জ্যোর্তিময় দাবি করেন, ‘‘২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন পরবর্তী সময় থেকেই পুরুলিয়া জেলায় এ ভাবেই বিজেপি কর্মীদের অপমৃত্যু দেখতে আমরা অভ্যস্ত। হরনাথ আত্মহত্যা করতে পারেন না। তাঁর পরিবারও একই কথা বলছে। আমরা চাইছি ঘটনার যথাযথ তদন্ত হোক।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া দাবি করেন, ‘‘বিজেপি এই ঘটনায় অন্যরকম ইঙ্গিত দিলেও স্থানীয় সূত্রে আমাদের কাছে খবর, এর পিছনে পারিবারিক অশান্তি রয়েছে। তবে আমরাও দাবি করছি, পুলিশ তদন্ত করে প্রকৃত সত্য সামনে আনুক। এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই।’’
পুলিশ জানাচ্ছে, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।