বিজেপি-র প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
বীরভূম জেলার ডেউচা-পাঁচামিতে ফের বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার ডেউচা-পাঁচামি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বিজেপি-র প্রতিনিধিদল। তখনই তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। পরে পুলিশ এসে বিজেপি-র প্রতিনিধিদলকে উদ্ধার করে।
বৃহস্পতিবার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজু-সহ বিজেপি-র বাকি প্রতিনিধিরা ডেউচা মোড়ের কাছে পৌঁছলে তাঁদের কালো পতাকা দেখানো হয়। পাশাপাশি গাড়ি আটকে স্লোগান দেওয়া হয়। এই ঘটনাকে ঘিরেই ফের এক বার উত্তপ্ত হল মহম্মদবাজার ব্লক।
যদিও বিজেপি নেতা রাজুর অভিযোগ, তৃণমূলের লোকেরাই তাঁদের পথ আটকে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ‘‘এই সরকারের উপর গ্রামবাসীদের বিশ্বাস নেই। গ্রামবাসীদের কথা শুনেই তা বোঝা যাচ্ছে।’’ সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে জমি অধিগ্রহণের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলা কথাও এ দিন তুলেছেন রাজু। তিনি বলেছেন, ‘‘তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বামফ্রন্ট সরকারকে বলতেন কলকাতা থেকে সব সিদ্ধান্ত হচ্ছে। এখন তো উনি নিজে কলকাতা থেকে দালাল পাঠিয়ে আলোচনা চালাচ্ছেন। আমাদের দাবি অবিলম্বে সরকারের আধিকারিকদের এসে সমস্ত গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলতে হবে। আমরা শিল্পের বিরুদ্ধে নই, পক্ষে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর ভাঁওতাবাজি ডেউচাবাসী বুঝে গিয়েছে বলেই গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বলে দাবি রাজুর। যদিও এই দাবি অস্বীকার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘রাজ্যের মানুষের কর্মসংস্থান হবে সেখানে বিজেপি রাজনীতি করার চেষ্টা করছে। মানুষ চায় সেখানে কয়লা উত্তোলন হোক, তাই মানুষ তাদের রাজনীতিতে বাঁধা দিয়েছে। এখানে তৃণমূলের কোনও হাত নেই।’’
বীরভূমের মহম্মদবাজারের ডেউচা-পাঁচামি এলাকায় কয়লাখনি শিল্প গড়ে তোলার ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। এই প্রকল্পটি হলে মহম্মদবাজার এলাকায় ধাপে ধাপে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা লগ্নির আশা রয়েছে। ওই প্রকল্পে লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হতে পারে বলে দাবি সরকারের। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন সিঙ্গুরের মতো জমি অধিগ্রহণ করা হবে না ডেউচা-পাঁচামিতে। আলোচনা করে জমি নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই আর্থিক সাহায্য, চাকরি ও পুনর্বাসনের কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি। কিন্তু সেই প্যাকেজের কথা জানার পর বীরভূমের মহম্মদবাজারের ওই এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ চাইছেন, রাজ্য সরকার আগে আলোচনা করুক, পুনর্বাসন দিক। তার পর জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে সেখানে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ল বিজেপি-র প্রতিনিধি দল।