প্রতীকী চিত্র
বামদের পর এবার বিজেপি। আমপান ক্ষতিপূরণ দূর্নীতি হয়েছে দুবরাজপুর পুর এলাকায়। এই অভিযোগে দিন কয়েক আগেই সরব হয়েছিল সিপিএম। দাবি ছিল, ৩০ জনের বেশি বাসিন্দা দুবরাজপুর পুরএলাকায় আমপানের ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। সেই তালিকায় বিডিও অফিসের অস্থায়ী কয়েকজন কর্মী ও কিছু নাম রয়েছে, যাঁদের ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার কোনও যুক্তি নেই। এ বার শহরজুড়ে পোস্টার সাঁটিয়ে শাসক দলের মদতে আমপান দুর্নীতির অভিযোগ তুলল শহর বিজেপি। রবিবার ওই পোস্টারগুলি নজরে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়ায়।
তবে শহরের জনবহুল এলাকায় সাঁটানো পোস্টারে শুধুমাত্র আমপান ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতির প্রসঙ্গই নয়, রেশনের চাল চুরি ও কোভিড মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় টাকা নয় ছয়ের জন্য শাসক দলকে দায়ী করেও অভিযোগ তোলা হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে। বিজেপির শহর সভাপতি সন্দীপ আগরওয়াল বলেন, ‘‘এখন কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে যাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু শাসকদল যে ভাবে অন্যায় করে চলেছে সেটা কিছুতেই মানা যাচ্ছে না। মানুষকে সে কথা জানাতেই আমরা পোস্টার দিয়েছি।’’ বিজেপির দাবি, রেশনে চাল বিলি শুরু হওয়চার পরই দুবরাজপুর ব্লকে এফসিআইএ-র স্ট্যাম্প সাঁটা বস্তায় করে শাসক দলের নামে ত্রাণ বিলি করার চেষ্টা হয়েছিল। সেটা বিজেপি আটকালেও মূল অভিযুক্তদের কোনও শাস্তি হয়নি। মানুষকে সে কথা মনে করাতেই এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে দাবি বিজেপির।
দুবরাজপুর পুরসভার প্রশাসনক বোর্ডের চেয়ারপার্সন পীযূষ পাণ্ডে অবশ্য একে গুরুত্ব দিতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির আদলে কোনও কাজ নেই। তাই এ সব করছে।’’ তৃণমূলের দাবি, দুবরাজপুর পুর এলাকায় চাল চুরির কোনও ঘটনা ঘটেনি। পীযূষের কথায়, ‘‘আমপানে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার সময় প্রশাসক পদে ছিলে মহকুমাশাসক। বিতর্ক সামনে আসার পর তৎপরতা শুরু হয়। এতে পুর এলাকার ব্লক অফিসের সঙ্গে জুড়ে থাকা চার জন ও পুর এলাকার আরও দু’জন— মোট ছ’জন তাঁদের টাকা ফেরত দিয়েছেন।’’
বিজেপির অবশ্য দাবি, শুধু শহর নয়, আমপান ত্রাণ নিয়ে গ্রামাঞ্চলেও দুর্নীতি হয়েছে। বিজেপি জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, ‘‘কয়েকটি জেলায় আমপানে ব্যাপক ক্ষতি হলেও আমাজের জেলায় তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ঝড় বৃষ্টিতে সামান্য কিছু মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কিন্তু এখন জানতে পারছি, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের বাদ দিয়ে শাসক দলের মদতে এমন অনেকেই ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন যাঁদের দোতলা বাড়ি, গাড়ি রয়েছে।’’
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ সিংহ জানান, ‘‘সবটাই একটি নির্দিষ্ট সরকারি প্রক্রিয়ায় হয়েছে। তারপর কারা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন তাঁদের তালিকা প্রকাশে হয়েছিল। অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি বা বিচ্যুতি থেকে থাকলে বা আপত্তি উঠলে প্রশাসন সেটা দেখে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে। এটা নিয়ে অহেতুক রাজনীতি করার কিছু নেই।’’