প্রতীকী ছবি।
বিধানসভা ভোটের আগেই বদল হলেন বিজেপির বীরভূম জেলা সভাপতি। শ্যামাপদ মণ্ডলকে বদলে জেলা সভাপতি করা হল নলহাটি থানার বাণীওড় গ্রামের বাসিন্দা ধ্রুব সাহাকে। এই মুহূর্তে তিনি দলের রাজ্য কমিটির সদস্য। রবিবার বিকেলে কলকাতায় রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সিদ্ধান্ত সামনে আসতেই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে জেলা সভাপতি বদলের কারণ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
দলের এক রাজ্য নেতা জানাচ্ছেন, রাজ্য যুব মোর্চার প্রাক্তন সহ সভাপতি ধ্রুব সাহাকে দায়িত্ব দেওয়ার পিছনে তরুণ মুখের তত্ত্ব প্রাধান্য পেয়েছে। তবে যে প্রশ্নটা দলের অন্দরে ঘোরাফেরা করছে, সেটা হল লোকসভা নির্বাচনে পরে শ্যামাপদ মণ্ডলকে সভাপতির দায়িত্বে আনার প্রথম দিকে দলের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল, সেটা সামাল দিয়ে যিনি ভালই এগোচ্ছিলেন তাঁকে হঠাৎ ভোটের কয়েক মাস আগে সরানোর পিছনে কারণ কী।
অনেকেই মনে করছেন, বিধানসভা নির্বাচনের টিকিট দেওয়ার লক্ষ্যেই শ্যামাপদকে সরিয়ে ধ্রুব সাহাকে দায়িত্বে আনা হল। যিনি সদ্য প্রাক্তন জেলা সভাপতির ঘনিষ্ট বলেই পরিচিত। শুধু তাই নয়, ধ্রুব সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীরও কাছের লোক বলেও পরিচিত। সদ্য প্রাক্তন জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলছেন, ‘‘দলের সিদ্ধান্ত। যা ভাল বুঝেছে করেছে। আমার কোনও বক্তব্য নেই।’’ নতুন জেলা সভাপতির প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বিজেপির অন্দরের খবর, ধ্রুব সাহা ছাত্র রাজনীতি (এবিভিপি) থেকে দলের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও দলের মধ্যেই তাঁর প্রতি বিরূপ মত ছিল। এখনও রয়েছে। এমনকি বীরভূমে প্রথম সংগঠন বাড়ানোর কাজে যাঁকে অগ্রগণ্য নেতা ধরা হয়, সেই দুধকুমার মণ্ডলেরও কাছের লোক বলে পরিচিত নন তিনি। ২০১৫ সালে অর্থ লগ্নি সংস্থায় এজেন্ট হিসেবে কাজ করে গ্রাহকদের প্রতারণা এবং অর্থ তছরুপ ও আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, গত বছর জুনে ময়ূরেশ্বর থানার গোচেপাড়া এলাকায় তৃণমূলের কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা এবং অস্ত্র রাখার অভিযোগে ধ্রুব সাহাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পুলিশ বলছে, একাধিক মামলাও রয়েছে জেলার বিভিন্ন থানায়।
বিজেপির জেলা নেতাদের একাংশ আড়ালে বলছেন, ‘‘এমন নেতাকে ভোটের আগে দায়িত্বে দেওয়া মানে দলকে পিছনের দিকে ঠেলে দেওয়া।’’ তবে ভিন্ন মতও আছে। নেতৃত্বের একাংশ বলছেন, ‘‘তৃণমূল বিরুদ্ধে লড়তে এসে মামলায় ফেঁসে যাওয়া নতুন নয়। এক জনকে দায়িত্ব দেওয়া হল। তার কাজ না দেখে নেতিবাচক মত দেওয়ার মানে নেই।’