পৌষমেলার মাঠে বসন্ত উৎসবের প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র
অনুষ্ঠানের কাছে পৌঁছতে না পারলেও বসন্ত উৎসবে আগত দর্শনার্থীদের সুবিধের জন্য এ বছর ডিজিটাল বড়পর্দার ব্যবস্থা করছে প্রশাসন। তাতেই দেখা যাবে অনুষ্ঠান।
বিশ্বভারতী এবং রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে এ বছরের বসন্ত উৎসব আয়োজিত হতে চলেছে শান্তিনিকেতনের মেলার মাঠে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছরের উৎসবকে সকলের কাছে পৌঁছে দিতে বিশ্বভারতীর রতনপল্লি, ডাকবাংলো, কাঠের মাঠ, স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ কমপক্ষে ৭টি স্থানে ‘ডিজিটাল দেওয়াল’ বসানো হবে। কোনও দর্শনার্থী যদি সময়ের মধ্যে মাঠে প্রবেশ করতে না পারেন, অথবা যানজটে আটকে যান, তাঁরা এই দেওয়ালগুলিতে বসন্ত উৎসবের সরাসরি সম্প্রসারণ দেখতে পাবেন। এ ছাড়াও গোটা বোলপুর শহরজুড়ে বিভিন্ন স্থানে ১২টি ৫৫ ইঞ্চি প্লাজমা টিভি লাগিয়েও অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচারই নয়, বসন্ত উৎসবে সৌন্দর্যায়নের দিকটিও প্রশাসনের নজরে আছে বলে জানাচ্ছেন কর্তারা। নানা রবীন্দ্রসঙ্গীতের টুকরো নিয়ে শতাধিক সুদৃশ্য হোর্ডিং বানিয়ে ইলামবাজার থেকে বোলপুর পর্যন্ত গোটা চত্বরকে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে প্রশাসনের। প্রশাসন সূত্রে দাবি, বর্তমানে হোর্ডিংগুলি মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এ ছাড়াও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সমগ্র অনুষ্ঠান চলাকালীন ৪টি ড্রোন লাগাতার নজরদারি চালাবে।
আশ্রমমাঠ থেকে মেলার মাঠের এই স্থান পরিবর্তন প্রধানত সাধারণ দর্শনার্থীদের দুর্ভোগ দূর করতে। তাই রাজ্য সরকার তথা জেলা প্রশাসনের কাছে দুর্ভোগ মুক্ত বসন্ত উৎসব আয়োজন করা একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। সেই চ্যালেঞ্জকে মাথায় রেখেই একের পর এক পরিকল্পনা গ্রহণ করে চলেছে প্রশাসন। বিশ্বভারতী সঙ্গে প্রশাসনের প্রথম বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, বিশ্বভারতীর নানা স্থানে নো এন্ট্রি এবং ড্রপ গেট তৈরি করা হবে, যাতে একটি নির্দিষ্ট সময়ে একসঙ্গে বহু দর্শনার্থীর চাপ ঠেকানো যায়। এর কয়েকদিন পরেই প্রচুর আবির ওড়ার ফলে যে দূষণ ও শারীরিক সমস্যা হয় তার মোকাবিলা করতে মেশিনের সাহায্যে জল ছেটানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। এখন শুধু এটাই দেখার প্রশাসনের এইসব পদক্ষেপের বাস্তব প্রয়োগ কতটা সম্ভব হচ্ছে।
সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্বভারতী লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের মধ্যে বসন্ত উৎসব বিষয়ে ফের বৈঠক হয়। বৈঠক সম্পর্কে বিশ্বভারতী কিছু জানাতে না চাইলেও, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার এবং বিশ্বভারতী যৌথভাবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে একটি সুন্দর বসন্ত উৎসব উপহার দিতে চাই। তার জন্য যা যা প্রয়োজন, সব রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ বিশ্বভারতীর এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের রাষ্ট্রপতি মনোনীত সদস্য পদ্মশ্রী সুশোভন বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগের বছর ক্যাম্পাসে যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল, তাকে আটকানোর জন্য, এ বছর সকাল ছ’টা থেকে দুপুর পর্যন্ত বিশ্বভারতী ক্যাম্পাস সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।’’