নতুন: শহরে ঢোকার পথে। কৃষ্ণবাঁধের কাছে। নিজস্ব চিত্র
মন্দিরনগরী বিষ্ণুপুর। সারা বছরই পর্যটকদের আনাগোনা থাকে। এত দিন শহরে আসার পথে বিভ্রান্ত হতেন অনেক পর্যটক। কলকাতার দিক থেকে জয়পুরের শাল জঙ্গল পার হয়ে ২ নম্বর রাজ্য সড়ক ধরে কৃষ্ণবাঁধের পাড়কে বাঁদিকে রেখে সোজা রাস্তা কিছুটা যেতেই সমস্যায় পড়তেন। কারণ রাস্তা সেখানে দু’ভাগ হয়ে যেত। অথচ, দিক নির্দেশ না থাকায় দিশেহারা হতেন বিষ্ণুপুর ঘুরতে আসা পর্যটকেরা। অনেক সময় ভুল করে বাইপাস ধরে বিষ্ণুপুর শহর ছেড়ে বেরিয়ে যেতেন। তবে এ বার সেই বিভ্রান্তি কাটাতে বুধবার শহরের প্রবেশ পথে সুদৃশ্য তোরণের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডল বলেন, ‘‘পর্যটন দফতরের উদ্যোগে কৃষ্ণবাঁধের পাড়ে বাইপাস ছেড়ে শহরে ঢোকার মুখে এক কোটি টাকা ব্যয়ে এই তোরণ তৈরি হল। খুব তাড়াতাড়ি বসবে সুদৃশ্য আলো। মন্দিরনগরীর সঙ্গে তাল রেখেই তৈরি করা হয়েছে তোরণ।’’
তোরণ নির্মাণের দায়িত্বে থাকা সংস্থার বাস্তুকার বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রথমে ঢালাই কাঠামো প্রথমে তৈরি করা হয়েছিল। ১১ মিটার উচ্চতা ও সাড়ে ১৪ মিটার চওড়া কংক্রিটের কাঠামোর উপর গ্লাস ফাইবারের কাজ করা হয়েছে। নতুন প্রবেশ দ্বার পেয়ে পর্যটকদের মতোই খুশি শহরের মানুষজনও। একই সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও সোনামুখীর দিক থেকে বিষ্ণুপুর শহরে ঢোকার তিনটি পথের মুখে তোরণ তৈরির দাবি উঠেছে।
বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্য ও পুরপ্রধান শ্যাম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বছরখানেক আগে জেলা সফরে আসা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিষ্ণুপুর শহরের পর্যটন প্রসার ও প্রচারের জন্য একটা তোরণ তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই বিষ্ণুপুরের পর্যটন বিকাশের জন্য এই তোরণ পেলাম আমরা।’’
বিষ্ণুপুর শহরের বাসিন্দারদের একাংশের বক্তব্য, উদ্যোগ ভাল। একই সঙ্গে তোরণ রক্ষণাবেক্ষণের দিকেও প্রশাসনের নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে তাঁদের মত। তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ২০১১ সালে বিষ্ণুপুরের তৎকালীন মহকুমাশাসক সুশান্ত চক্রবর্তী উদ্যোগী হয়ে পর্যটন দফতরের আর্থিক সহায়তায় কলকাতা থেকে বিষ্ণুপুরের দূরত্ব উল্লেখ করে বেশ কয়েকটি ছোট তোরণ রাস্তার পাশে তৈরি করিয়েছিলেন। কিন্তু, দেখভালের অভাবে সে সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যেগুলি এখনও রয়েছে, সে সবে অযত্নের ছাপ স্পষ্ট। তাই তোরণ রক্ষণাবেক্ষণে জোর দিতে বলছেন।