রানাঘাটের ১১২ ফুটের দুর্গা নিয়ে জেলাশাসককে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছে কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নদিয়ার রানাঘাটে ১১২ ফুটের দুর্গা নিয়ে মামলা হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। অভিযোগ, পুলিশ সেই পুজোর জন্য অনুমতি দেয়নি। তাই অনুমতি চেয়ে পুজো কমিটির তরফে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। সেই মামলায় এ বার জেলাশাসককে সিদ্ধান্ত নিতে বলল হাই কোর্ট। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নদিয়ার জেলাশাসককে ১১২ ফুটের দুর্গাপ্রতিমা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। বুধবার বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। আদালতের নির্দেশ, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টোর মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসককে। তাঁর সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী শুনানি হবে। ওই দিন বিকেলেই আবার মামলাটি শুনবে আদালত।
এ বছর রানাঘাটের কামালপুর এলাকার অভিযান সঙ্ঘ ১১২ ফুটের দুর্গা প্রতিমা তৈরি করছে। কিন্তু পুলিশ তাতে অনুমতি দেয়নি বলে অভিযোগ। পুজো উদ্যোক্তাদের তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ফিরদৌস শামিম জানান, প্রায় ৫০ বছর ধরে ওই ক্লাব দুর্গাপুজো করছে। কোনও বছর অনুমতি নিয়ে সমস্যা হয় না। এ বছর ১১২ ফুটের দুর্গা প্রতিমা বানানো হয়েছে। যা নজির গড়তে পারে। প্রতি বারের মতো গত ৩ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। তাঁরা কোনও সিদ্ধান্ত জানাননি। আবার, কর্তৃপক্ষ কোনও আপত্তিও করেননি। অথচ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওই প্যান্ডেলের জন্য অনুমতি দেওয়া উচিত নয় বলার পরেই পুলিশ গিয়ে প্যান্ডেল তৈরিতে বাধা দেয়। ওই পুজো দেখতে রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধিরাও আসতে পারেন জানিয়েছেন উদ্যোক্তাদের আইনজীবী।
রাজ্যের আইনজীবীর পাল্টা সওয়াল, ১৪ ফুটের রাস্তার উপর ওই প্যান্ডেল করা হয়েছে। ২০১৫ সালে কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কে ‘সবচেয়ে বড় দুর্গা’ তৈরি করা হয়েছিল। ৮৮ ফুটের সেই দুর্গা দেখতে ভিড়ের চাপে পুজোর মাঝেই প্যান্ডেল বন্ধ করে দিতে হয়েছিল দর্শনার্থীদের জন্য। সে কথা মনে করিয়ে দেন রাজ্যের আইনজীবী। দেশপ্রিয় পার্কের মতো রানাঘাটের এই পুজোতেও পদপিষ্ট হওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা। রাজ্যের যুক্তি, তাই এই পুজোতেও অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।
দু’পক্ষের সওয়াল শুনে বিচারপতি ভট্টাচার্যের পর্যবেক্ষণ, কর্তৃপক্ষ এত দিনেও কোনও সিদ্ধান্ত জানাননি কেন? অনুমতি দেওয়া হবে কি না, তা তাঁরা আরও আগে জানাতে পারতেন। বিচারপতি এর পরেই জানান, আদালত ২৪ ঘণ্টা সময় দিচ্ছে, তার মধ্যেই জেলাশাসককে এই পুজোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে। হাই কোর্টের মন্তব্য, ‘‘আদালত আশা করছে এমন ভাবার কোনও কারণ নেই যে, জেলাশাসক নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন না। তিনি কী সিদ্ধান্ত নেন, পরবর্তী শুনানির দিন আদালত তা বিবেচনা করবে।’’