ক্ষুব্ধ গ্রাহক। নিজস্ব চিত্র
রেশনে দেওয়া চাল ও গম ওজনে কম!— এমনই অভিযোগ তুলে বাসিন্দারা ডিলারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন। শনিবার বিষ্ণুপুর ব্লকের বেলশুলিয়া পঞ্চায়েতের তিরবঙ্ক গ্রামের ঘটনা। পরে তাঁরা মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) এবং মহকুমা খাদ্য নিয়ামকের (বিষ্ণুপুর) কাছে ওই ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে আবেদনপত্র জমা দেন। মহকুমাশাসক মানস মণ্ডল বলেন, ‘‘লিখিত অভিযোগ পাওয়ামাত্র বিডিও-কে (বিষ্ণুপুর) তদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে।’’ বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দেবনাথ বাউরি বলেন, ‘‘সাধারণ প্রান্তিক মানুষের খাবারে যাঁরা ভাগ বসাচ্ছেন, প্রশাসন তাঁদের ছেড়ে দেবে না। পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষকে বিষয়টি দেখতে বলছি।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিরবঙ্ক, চুয়াশোল, বাসুদেবপুর, কুলুপুকুর গ্রামের সাড়ে তিনশো বাসিন্দা ওই এলাকার রেশন ডিলারের কাছে জিনিসপত্র কিনতে যান। এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রেশন ডিলার অনন্ত দে-কে ঘিরে বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। রেশন ডিলার অনন্ত দে দাবি করেন, ‘‘আগে কোনও দিন রেশনে কম চাল, গম দিইনি। শুক্রবার ওজন করার ডিজিটাল যন্ত্র গোলমাল করায় জনা কুড়ি গ্রাহককে চাল, গম কম দেওয়া হয়ে গিয়েছে। তাঁদের শনিবার বাকি চাল, গম দেব বলে জানিয়েছিলাম।’’
যদিও তিরবঙ্কের বাসিন্দা লক্ষ্মী পৌলিক, তপন পৌলিক, অরুণ মহাদণ্ডদের অভিযোগ, ‘‘হামেশাই রেশনে চাল, গম কম দেওয়া হয়। অথচ রশিদে ওজনের পরিমাণ বেশি লেখা হয়। আপত্তি তুললে ডিলার উল্টে বকাঝকা করতেন।’’
বাসিন্দাদের দাবি, শুক্রবার বিকেলে রেশনে চাল, গম কিনে পরিমাপ নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় অনেকেই স্থানীয় একটি মুদিখানার দোকানে ডিজিটাল যন্ত্রে ওজন যাচাই করেন। তখন দেখা যায়, প্রত্যেককে ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম করে কম চাল ও গম দেওয়া হয়েছে। সেই ক্ষোভেই এ দিন সকালে তাঁরা রেশন ডিলারকে ঘেরাও করেন।
বাসিন্দাদের দাবি, তাঁদের অধিকাংশই শালপাতা ও জ্বালানি কুড়িয়ে বিষ্ণুপুরের বাজারে বিক্রি করে সংসার চালান। রেশনই তাঁদের বড় ভরসা। বেলশুলিয়া পঞ্চায়েতের স্থানীয় সদস্য রুমা মহাদণ্ডের দাবি, ‘‘কিছু বলতে গেলে রেশন ডিলার মামলার ভয় দেখাতেন।’’ যদিও ডিলারের দাবি, ‘‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে গ্রামবাসীর একাংশ মিথ্যা অভিযোগ করেছে আমার বিরুদ্ধে।’’
মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘তদন্তে গাফিলতি দেখলে সংশ্লিষ্ট রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ মহকুমা খাদ্য নিয়ামক দিব্যজ্যোতি তালুকদার বলেন, ‘‘গ্রামবাসীর লিখিত অভিযোগ পেলে আমি নিজে পরিদর্শনে যাব।’’