—প্রতীকী চিত্র।
গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেখানে যেখানে দলের নির্দেশ উপেক্ষা করা হয়েছে, সে জন্য দায়ী নেতাদের চিহ্নিত করে কি তাঁদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হবে? এই প্রশ্ন ঘুরছিল তৃণমূলের অন্দরে। সেই সম্ভাবনাই সত্যি হতে চলেছে বলে তৃণমূল সূত্রে দাবি।
তৃণমূল সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় ভাবে অনুমোদিত তালিকা না মেনে যাঁরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন, তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির কাছে তাঁদের নামের তালিকা পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে ঘটনার সত্যতা আছেন কি না। সত্যি হলে কী কারণে এমনটা ঘটল সেটা ব্যাখ্যা-সহ বিশদে জানাতে বলা হয়েছে। তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী ঘটনার সত্যতা মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘দলের অনুমোদিত তালিকা উপেক্ষা করে প্রধান ও উপপ্রধান হয়েছেন এমন ১৪ জনের নাম পাঠানো হয়েছে।’’
দলের শীর্ষ নেতাদের একাংশ জানাচ্ছেনন, সেপ্টেম্বরের ১০ তারিখ দলের কোর কমিটির বৈঠক বসতে পারে। সেখানে এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ আলোচনা হওয়ার কথা। সেই রিপোর্ট তৃণমূল ভবনে পৌঁছনোর পরই দল ‘দোষীদের’ বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থা নিতে পারে বলে সূত্রের দাবি।
জেলার ১৬৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৩৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় শাসক দল তৃণমূল। সেগুলির সবকটিতে তো শাসক দল বোর্ড গড়েছেই, পাশাপাশি বেশ কিছু ত্রিশঙ্কু পঞ্চায়েত নিজেদের দখলে এনেছে তৃণমূল। টাই হয়ে যাওয়া দু’টি পঞ্চায়েতেও বোর্ড গড়েছে শাসক দল। কিন্তু অভিযোগ, জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষেত্রে সমস্যা না হলেও বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েতে সমস্যা হয়েছে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্টতা থাকা সত্ত্বেও দলের তরফে পাঠানো নামগুলিকে প্রাধান্য না দিয়ে ভোটাভুটিতে অন্য নির্বাচিত সদস্যকে প্রধান ও উপপ্রধান বেছেছেন সংখ্যাগরিষ্ঠ নির্বাচিত সদস্যরা।
তৃণমূলের অন্দরের খবর, এর নেপথ্যে দলের স্থানীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। সে সব ক্ষেত্রে শক্তিশালী গোষ্ঠীর ইচ্ছেই প্রধান্য পেয়েছে। দল সূত্রেই খবর, সেই তালিকায় খয়রাশোল, দুবরাজপুর ও বোলপুরের বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত রয়েছে। দলের নেতাদের অনেকের মতে, লোকসভা নির্বাচনের আগে দলে শৃঙ্খলা ও অনুশাসন ফেরাতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। দলের এক শীর্ষ নেতা বলছেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় দলের টিকিট না পেয়ে যাঁরা দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে নির্দল প্রার্থী হয়েছিলেন, তাঁদের অনেককে সাসপেন্ড করেছিল দল। তাই প্রধান বা উপপ্রধানদের ক্ষেত্রেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হতে পারে।’’