পার্টি অফিসে মণিরুল ইসলাম। সোমবার লাভপুরে। নিজস্ব চিত্র
গত পঞ্চায়েতের মতো এ বারও ভোট হচ্ছে না নানুর, লাভপুর এবং লাভপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাঁইথিয়া ব্লকের কিছু পঞ্চায়েতে। সোমবার পর্যন্ত বিরোধীরা প্রার্থী দেননি। ফলে এ বারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে চলেছেন শাসকদলের প্রার্থীরা। তবে, নানুরের চারকল গ্রাম পঞ্চায়েতের দু’টি আসন, লাভপুরের ঠিবা এবং লাভপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি করে আসনে শাসকদলেরই দু’জন করে প্রার্থী রয়েছেন। শাসকদলের বক্তব্য, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নয়। ক্রুটিনিতে বাদ পড়ার আশঙ্কাতেই বাড়তি মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়েছে।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে লাভপুর ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েতে জেলা পরিষদের তিন, পঞ্চায়েত সমিতির ৩২ এবং পঞ্চায়েতের ১৪৭টি আসনে বিরোধীরা কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি। ওই এলাকা থেকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে সভাধিপতি নির্বাচিত হন বিকাশ রায়চৌধুরী। এ বারেও ওই সব আসনে প্রার্থী দিতে পারল না বিরোধীরা। লাভপুর বিধানসভা কেন্দ্রের আওতাধীন সাঁইথিয়া ব্লকের বেশ কিছু পঞ্চায়েতেও প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা।
নানুরেও ১১টি পঞ্চায়েতের জেলা পরিষদের তিন, পঞ্চায়েত সমিতির ৩১ এবং ১৬৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধী শিবির। গত বার অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে কয়েক’টি আসনে শাসকদলের ‘অফিসিয়াল প্রার্থী’র সঙ্গে গোঁজ প্রার্থীর লড়াই হয়েছিল। জেলা পরিষদের একটি মাত্র আসনে সিপিএম প্রার্থী দিতে পেরেছিল। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই একটি মাত্র আসনে লড়েও সিপিএমের কাছে হারতে হয়েছিল তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্যকে।
এ বারে বিরোধীরা তো বটেই, তৃণমূলের ভিন্ন গোষ্ঠীরও কেউ মনোনয়ন জমা করেনি।
সোমবার বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দেওয়া রুখতে বাসে করে নানুর, লাভপুর, আমোদপুরে সাঁইথিয়া ব্লক অফিস সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক কর্মী জমায়তের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এমনকি ব্লক অফিস এড়িয়ে বিরোধীরা যাতে মহকুমাশাসকের দফতরে মনোনয়ন জমা দিতে না পারে, তার জন্য রাস্তার মোড়ে মোড়ে বাস এবং সমস্ত ধরণের গাড়ি দাঁড় করিয়ে তল্লাশি চালানোরও অভিযোগ ওঠে শাসকদলের বিরুদ্ধে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা এবং বিজেপি-র জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় জানান, বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দেওয়া ঠেকাতে সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছিল শাসকদল। প্রাণের ভয়ে তাই প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে যেতে পারেনি।
অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের নানুর ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য এবং লাভপুর এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের জেলা সহ সভাপতি আব্দুল মান্নান দাবি করেছেন, ‘‘গাড়ি থামিয়ে তল্লাশির অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমরা তো ফুলের মালা নিয়ে অপেক্ষায় ছিলাম। বিরোধীরা মনোনয়ন জমা করতে এলেই সেই মালা পড়িয়ে বরণ করে নিতাম।’’