ভোট-চিত্র: ভোটকেন্দ্রের পথে। রাজনগরের চন্দ্রপুরে
মনোনয়ন পর্ব থেকে প্রত্যাহার— জেলায় ব্যতিক্রমী ছিল রাজনগর। ভোটের দিন দু’একটি বুথে ছাপ্পা মারার অভিযোগ ছাড়া মোটের উপর শান্তিপূর্ণই রইল। শুধু তাই নয়, রাত আটটার পরেও রাজনগরের কিছু বুথে চলল ভোট।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত প্রশাসনের হিসেবে ভোট পড়েছে ৭৯.৪৫ শতাংশ। রাজনগরের বিডিও দীনেশ মিশ্র বলেন, ‘‘মোট ৫১টি বুথে ভোটগ্রহণ ছিল। ৪৩টিতে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন। বাকি আটটিতে সন্ধ্যার পরেও ভোট চলছে।’’
বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, শাসকদলের দাঁড়িয়ে থাকা ‘উন্নয়ন’ ডিঙিয়ে মনোনয়ন জমা করতে সর্বত্রই বাধা পেতে হয়েছে। রাজনগরে সেই অভিযোগ ছিল না। বিরোধীরা অবাধে মনোনয়ন জমা করেছিলেন। তবে মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিয়েছে শাসকদল, এই অভিযোগ তুলে বেশ কিছু আসন থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিলেও শেষবেলায় এই ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫৫টি আসনের মধ্যে ৩৮টিতে এবং পঞ্চায়েত সমিতির ১৩টি আসনের ৯টিতে বিরোধী প্রার্থী ছিল।
এই আবহে রাজনগরে কী হতে চলেছে, তা নিয়ে শাসক-বিরোধী দুই শিবিরেই কৌতূহল ছিল চরমে। সকাল থেকেই বুথে বুথে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
বিশেষ করে মহিলাদের। প্রায় প্রতিটি বুথেই এমন ছবি দেখা গিয়েছে। বেলা গড়ানোর পরে
বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, ভবাণীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুনগ্রাম বুথটিকে নিয়ে। অভিযোগ ছাপ্পা-ভোট হয়েছে। বিজেপি ও সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদাও একই অভিযোগ করেন।
কী অভিযোগ?
সিপিএম ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সকাল থেকে ওই বুথে লম্বা লাইন ছিল। কিন্তু এগারোটার পরে বুথের দখল নেয় তৃণমূল আশ্রিত দু্ষ্কৃতীরা। প্রায় ১৫টির মতো ছাপ্পা ভোট দেওয়া হয়। কেন তাঁরা তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলেন না, তা নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে। ব্লক থেকে আধিকারিক এলে তাঁকেও ঘেরাও করে রাখেন। দাবি করেন, পুনরায় ভোট করানোর জন্য। মনসা হাঁসদা বলছেন, ‘‘শুধু ওই বুথ নয়। আরও অনেক বুথে ছাপ্পা ভোট হয়েছে।’’
রাজনগরের ব্লক প্রশাসনের দাবি, খবর পাওয়া মাত্রই ওই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে লোক পাঠানো হয়েছিল। বিডিও-র দাবি, ছাপ্পা ভোট হয়েছে এমন প্রমাণ প্রাথমিক ভাবে পাওয়া যায়নি। ভোটকর্মীদেরও কোনও অভিযোগ ছিল না। যেহেতু স্থানীয়রা বলছেন তাই তাঁদের দাবি লিখিত আকারে নেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানোও হয়েছে।
এলাকার তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকুমার সাধু বলছেন, ‘‘রাত আটটার পরেও ভোট দিচ্ছেন এলাকার
মানুষ। অবাধ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন ছাড়া এ ছবি সম্ভব নয়। তার পরেও এমন অভিযোগ অর্থহীন। হেরে যাওয়ার ভয় থেকেই বিরোধীরা এমন অভিযোগ করছে।’’