কলেবরে বাড়ছে দুই পুরশহর

জেলার মোট ৬টি পুরসভার মধ্যে ২০২১ সালে পুরনির্বাচন হওয়ার কথা পাঁচটিতে। সেই তালিকায় রয়েছে রামপুরহাট, সাঁইথিয়া, সিউড়ি, বোলপুর ও দুবরাজপুর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৪২
Share:

সাঁইথিয়া বিধানসভা এলাকার চারটি পঞ্চায়েতের কিছুটা করে অংশ জুড়তে চলেছে সিউড়ি শহরের সঙ্গে।

২০২১ সালের পুর-নির্বাচনের আগেই কলেবরে বাড়তে চলছে জেলার দুই পুরশহর— সিউড়ি ও বোলপুর। তা নিয়ে তৎপরতা শুরু হল।

Advertisement

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দু’টি পুরএলাকা লাগোয়া কোন কোন মৌজা পুরসভায় যুক্ত হবে তা এক রকম ঠিক হয়ে গিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিও জারি হয়ে গিয়েছে। পুনর্বিন্যাসের পরে পুরসভা দু’টির প্রকৃত ছবি কী হয় বা কতগুলি করে ওয়ার্ড বাড়তে পারে তা নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হবে আগামী বুধবার। ওই বৈঠক ডেকেছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) শুভাশিস বেইজ। বৈঠকে থাকার কথা পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের কর্তা, সিউড়ি ও বোলপুর মহকুমার মহকুমাশাসক রাজীব মণ্ডল ও অভ্র অধিকারী, দু’টি পুরসভার পুরপ্রধান ও অন্য আধিকারিকদের।

জেলার মোট ৬টি পুরসভার মধ্যে ২০২১ সালে পুরনির্বাচন হওয়ার কথা পাঁচটিতে। সেই তালিকায় রয়েছে রামপুরহাট, সাঁইথিয়া, সিউড়ি, বোলপুর ও দুবরাজপুর। দুবরাজপুর পুরসভার মেয়াদ ফুরিয়েছে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে। বাকিগুলির মেয়াদ শেষ হবে সামনের বছরে। পুরনির্বাচন না হলেও পুনর্বিন্যাস শেষে ইতিমধ্যেই ওয়ার্ডভিত্তিক আসন সংরক্ষণের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে ওই দু’টি পুরসভার জন্য। সাঁইথিয়া ও রামপুরহাটে পুনর্বিন্যাস হচ্ছে না।

Advertisement

নির্বাচনের কাজ এখনও শুরু হয়নি ঠিকই। কিন্তু যেহেতু কলেবরে বাড়ছে বোলপুর ও সিউড়ি পুরসভা, সামনের বছরের গোড়ায় বা মাঝামাঝি পুরভোট হবে ধরেই পুরনির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে।

সিউড়ি পুরসভা সূত্রে খবর, সিউড়ি ও সাঁইথিয়া বিধানসভা এলাকার চারটি পঞ্চায়েতের কিছুটা করে অংশ জুড়তে চলেছে সিউড়ি শহরের সঙ্গে। সঙ্গে সিউড়ি বিধানসভা এলাকার তিলপাড়া, কড়িধ্যা এবং মল্লিকপুর পঞ্চায়েত, সাঁইথিয়া বিধানসভার কেন্দুয়া পঞ্চায়েতের কিছুটা করে অংশও। জানা গিয়েছে, হাটজনবাজার কলোনির দু’টি সংসদ, কেন্দুয়া ও কেন্দুয়া-সোনাতোড় মিলিয়ে চারটি সংসদ সিউড়ি পুরসভার আওতাভুক্ত হচ্ছে। অন্য দিকে মল্লিকপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রবীন্দ্রপল্লি, আবদারপুর, সাজানোপল্লি, তিলপাড়া পঞ্চায়েতের তিলপাড়া গ্রাম, অরবিন্দপল্লি, নতুনপল্লি সিউড়ি পুরসভায় মিশে যাচ্ছে। কড়িধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়বাগানও যুক্ত হবে সিউড়ি পুরশহরে।

সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘বর্তমানে চারটি পঞ্চায়েত এলাকায় বসবাস করছেন এমন প্রায় ২৪ হাজার নাগরিক আগামী দিনে পুরসভা এলাকার বাসিন্দা হতে চলেছেন। তাঁরা উন্নততর পরিষেবা পাবেন। এতে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের কোনও আপত্তি নেই, সেই মর্মে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ জমা পড়েছিল বহু আগেই।’’

একই ভাবে বোলপুর পুরসভার সঙ্গে জুড়তে চলেছে সিয়ান মুলুক, রাইপুর সুপুর ও রূপপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকটি মৌজা। তবে সব চেয়ে বেশি অংশ জুড়ছে রূপপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার। পুরসভা সূত্রে খবর, সিয়ান মুলুক গ্রাম পঞ্চায়েতের গায়েশপুর মৌজা, রাইপুর সুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশীপুর, চন্দনপুর, শিবপুর, চণ্ডীপুর ও দক্ষিণ চণ্ডীপুর এবং প্রান্তিক, বিনয়ভবন, গোয়ালপাড়া. শ্যামবাটি, সুরুল বল্লভপুরের একটা অংশ নিয়ে বিশাল এলাকা যুক্ত হচ্ছে বোলপুর পুরএলাকায়।

বোলপুরের পুরপ্রধান সুশান্ত ভকত বলছেন, ‘‘পুরসভার আয়তন একধাক্কায় বেড়ে যাচ্ছে অনেকটাই। আগে যেখানে বোলপুর পুরশহরের আয়তন ছিল ১৩.৫ বর্গ কিলোমিটার, সেটাই বেড়ে হচ্ছে ৩৮.৫ বর্গ কিলোমিটার।’’ পুরপ্রধানের সংযোজন, ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী ওই এলাকায় বসবাসকারী ৩২ হাজার ৫০০ মানুষ পুরসভা এলাকার নাগরিক হবেন।

কতগুলি ওয়ার্ড বাড়বে?

দুই পুরপ্রধানই জানিয়েছেন, আলোচনা চলছে তা নিয়েই। বুধবার বিকেলের বৈঠকের পরেই সেটা স্পষ্ট হবে। তবে পুরসভা ও প্রশাসনিক সূত্রে খবর, সিউড়িতে পাঁচটি ও বোলপুরে ৫-৬টি অতিরিক্ত ওয়ার্ড জুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বোলপুরে এই মুহূর্তে জনসংখ্যা ৮০ হাজারেরও বেশি। সিউড়িরও কমবেশি তাই। পরিসর ও জনসংখ্যা বাড়লে দু’টি ‘ডি ক্যাটেগরি’ পুরসভা ‘সি ক্যাটেগরি’র তকমা পাবে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement