চুমুক: চায়ের ভাঁড় হাতে শ্যামাপদ। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদীর চমক ছিল ‘চায়ে পে চর্চা’। চায়ের দোকানে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে জনসংযোগে শামিল হয়েছিলেন বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে সেই ধারা অনুসরণ করেন অনেকেই। সম্প্রতি নানা এলাকায় চায়ের দোকানে আড্ডা দিয়ে জনসংযোগ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও। এ বার চায়ের দোকানে দেখা গেল বীরভূমের জেলা বিজেপি সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলকে।
রবিবার সকালে সিউড়ি পুর এলাকার ১৩, ১৪ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে স্থানীয় চায়ের দোকানে আড্ডা দেন শ্যামাপদ। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলেন। এর আগে তিনি সিউড়ি পুর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডেও একই রকমভাবে চায়ের দোকানে আড্ডা দিয়েছিলেন। পুরভোটকে সামনে রেখেই জেলা সভাপতির এই উদ্যোগ বলে বিজেপি সূত্রে খবর। তা নিজেও মানছেন শ্যামাপদ। তাঁর কথায়, ‘‘মূলত পুরভোটকে সামনে রেখেই আমার এই উদ্যোগ। প্রতিদিন না হলেও যখনই সময় হচ্ছে আমি পুর এলাকার ওয়ার্ডগুলিতে চায়ের দোকানে বসছি। সেখানে দলীয় কর্মী তো বটেই, সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলছি।’’
আগামী বছরের প্রথম দিকেই জেলার পাঁচটি পুর এলাকায় ভোট হওয়ার সম্ভাবনা। তার আগেই শাসক দল জেলায় বিধানসভা ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন শুরু করেছে। শাসক দলের নেতাদের দাবি, বিধানসভাকে সামনে রেখেই তাঁদের ওই কর্মসূচি। কিন্তু অনেকেরই মতে, ওই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সামনের পুরভোটকেও নজরে রেখেছেন তৃণমূলের জেলার নেতারা। এই পরিস্থিতিতে পাল্টা কৌশল হিসেবে শ্যামাপদ চায়ের দোকানে আড্ডা শুরু করেছেন বলে বিজেপি সূত্রে খবর। মূলত সংগঠন মজবুত করা, মানুষকে বিজেপিমুখী করা, বিজেপি ক্ষমতায় এলে কী কী করবে তা জানানো এবং শাসক দলের নানান গাফিলতির কথা সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরাই এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য বলে দলের নেতাদের একাংশের দাবি। শ্যামাপদ বলছেন, ‘‘স্থানীয়রা নিজেদের নানা অভাব অভিযোগের কথা আমাকে জানিয়েছেন।’’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, নেতাদের কাছে এই চায়ের কাপের আড্ডার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কারণ খেলা হোক বা রাজনীতি— চা চক্রের আড্ডায় তা নিয়ে চলে বিস্তর আলোচনা। তাই অনেক নেতাই জন-মন বুঝতে চায়ের আড্ডায় ঢুঁ মারেন। কিছুদিন আগে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও চায়ের দোকানে গিয়ে আড্ডা দিতে শুরু করেছিলেন। তৃণমূল কর্মীদের অনেকে দাবি করেছিলেন, তাঁদের ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির পাল্টা দিতেই ওই কৌশল নেয় বিজেপি। বীরভূমে শ্যামাপদর ওই কর্মসূচিকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। দলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওঁদের এখন যা অবস্থা তাতে পানের দোকান, চায়ের দোকানে ঠাঁই হয়েছে। আশা করছি আগামী একমাস পর ওই ঠাঁইটুকুও থাকবে না।’’