BDO

পাশে দাঁড়ালেন ব্লকের কর্মীরা

গত ১৬ অগস্ট দুপুরে বাজ পড়ে মৃত্যু হয় রঘুনাথপুর ২ ব্লকের চেলিয়ামা গ্রামের একই পরিবারের তিন জনের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৯ ০০:৩৭
Share:

বজ্রাঘাতে নিহতদের সন্তানদের হাতে অঙ্গীকারপত্র তুলে দিচ্ছেন বিডিও, পাশে পুরুলিয়া জেলা সভাধিপতি। নিজস্ব চিত্র।

বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছিল একই পরিবারের তিন জনের। পরিবারের ছয় সন্তানের মধ্যে কেউ হারিয়েছে বাবা-মা দু’জনকে। কেউ আবার হারিয়েছে মাকে। সেই বাচ্চাদের ভবিষ্যতে পড়াশোনা নিশ্চিত করতে তাদের পাশে দাঁড়ালেন রঘুনাথপুর ২ ব্লক প্রশাসনের আধিকারিক ও কর্মীরা। ব্লকের কর্মীরাই অর্থ দিয়ে গড়লেন তহবিল। সেই টাকা বুধবার জমা করা হল ব্যাঙ্কে। ওই টাকা যাতে বাড়ির কেউ অন্য কাজে ব্যবহার করতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে ওই পরিবারের দুই সদস্যের সঙ্গে পঞ্চায়েতের এক কর্মীকে জুড়ে দিয়ে যৌথ ভাবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হল। সেই সঙ্গে বিডিও, সিডিপিও, বিএমওএইচ এবং অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক—এই চার আধিকারিক মিলে অঙ্গীকার করলেন, ওই শিশুদের উপরে নিয়মিত নজর রাখবেন তাঁরা।

Advertisement

রঘুনাথপুর ২ ব্লক প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাবা-মা হারানো সন্তানগুলির পড়াশোনা নিশ্চিত করতে ব্লক প্রশাসনের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।”

গত ১৬ অগস্ট দুপুরে বাজ পড়ে মৃত্যু হয় রঘুনাথপুর ২ ব্লকের চেলিয়ামা গ্রামের একই পরিবারের তিন জনের। মাঠে চাষের কাজ করার সময়ে মারা যান রঞ্জিত বাউরি, তাঁর স্ত্রী রিনা বাউরি এবং রঞ্জিতের দাদা সঞ্জয়ের স্ত্রী রিঙ্কু বাউরি। আহত হন সঞ্জয়। সে দিনই সন্ধ্যায় গ্রামে গিয়ে ওই পরিবারের সদস্যদের হাতে ‘সমব্যথী’ প্রকল্পের টাকা তুলে দেন বিডিও (রঘুনাথপুর ২) মৃণ্ময় মণ্ডল ও পাড়ার বিধায়ক উমাপদ বাউরি।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রের খবর, রঞ্জিত ও রিনার দু’টি সন্তান রয়েছে। রিঙ্কুর চার সন্তান। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে এক জন ১১ বছরের। বাকিরা দুই থেকে সাত বছরের মধ্যে। বিডিও বলেন, ‘‘মৃতদের সন্তানদের পড়াশোনা যাতে টাকার অভাবে বন্ধ না হয়, সেই জন্য তহবিল তৈরি করতে ব্লকের সমস্ত আধিকারিক ও কর্মীদের কাছে সাধ্যমতো আর্থিক সাহায্য করার আবেদন জানিয়েছিলাম। ব্লক প্রশাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ভূমি ও ভূমি সংস্কার, কৃষি-সহ বিভিন্ন দফতরের কর্মীরা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সাহায্যের হাত। আপাতত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে সেই টাকা জমা করা হয়েছে। বাজ পড়ে মৃত্যুর জন্য সরকারি টাকাও ওই অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে। এ ছাড়া, আরও অনেকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসছেন।’’

প্রশাসনের এই উদ্যোগে আপ্লুত ভাই ও স্ত্রীকে হারানো সঞ্জয়। তিনি বলেন, ‘‘ভাইয়ের মৃত্যুর পরে তার সন্তানদের দায়িত্ব আমার কাঁধেই। প্রশাসন যে ভাবে সাহায্য করছে, তাতে আমার পক্ষে ওই দায়িত্ব পালন করা অনেকখানি সহজ হয়ে গেল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement