—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
প্রায় বছর পাঁচেক পরে পঞ্চম রাজ্য অর্থ কমিশনের টাকা পেল বাঁকুড়া জেলা পরিষদ। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে বাঁকুড়া জেলার জন্য প্রায় ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। যার প্রায় অর্ধেক টাকা ইতিমধ্যে জেলাকে দেওয়া হয়েছে।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি অনসূয়া রায় জানান, প্রথম দফার বরাদ্দ অর্থে জেলা পরিষদকে স্বনির্ভর করতে জোর দেওয়া হচ্ছে। স্থায়ী রোজগারের লক্ষ্যে ম্যারেজ় হল, কমিউনিটি হল, মার্কেট কমপ্লেক্স গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, “প্রথম দফার বরাদ্দে জেলা পরিষদের আয় বৃদ্ধির উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। আর দ্বিতীয় দফায় জেলার পরিকাঠামোগত উন্নয়নমূলক কাজকর্ম বেশি করে করা হবে।” জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ অর্চিতা বিদ জানান, ইতিমধ্যে প্রথম দফার বরাদ্দ অর্থের পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। শীঘ্রই দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
প্রশাসনিক সূত্রে দাবি, পঞ্চম রাজ্য অর্থ কমিশনের টাকা জেলা পরিষদের গত বোর্ড এক বারও পায়নি। যার ফলে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় নানা কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। কেন্দ্রের পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের দেওয়া টাকায় বর্তমানে জেলায় কাজ চলছে। বাঁকুড়া জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা রাইপুরের বিধায়ক মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু বলেন, “আমাদের বোর্ডের সময়ে কোভিডই হোক বা অন্য কোনও কারণে রাজ্য অর্থ কমিশনের বরাদ্দ এক বারও মেলেনি। এতে স্বাভাবিক ভাবে অর্থের সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তবে এ বার সেই সমস্যা মেটায় কাজের গতি অনেকটাই বাড়বে বলে মনে হয়।”
যদিও লোকসভা নির্বাচনের আগে এই অর্থ পাঠিয়ে শেষ মুহূর্তে পরিকাঠামো উন্নয়নের চেষ্টা হচ্ছে বলে কটাক্ষ ছুড়েছেন বিরোধীরা। ওন্দার বিজেপি বিধায়ক তথা দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অমরনাথ শাখা বলেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জনমোহিনী হওয়ার লক্ষ্যে মেলা-খেলায় টাকা বেশি খরচ করেছেন। এ দিকে অর্থাভাবে রাজ্য অর্থ কমিশন জেলা পরিষদের প্রাপ্য অর্থ বরাদ্দ করতে না পারায় গ্রামাঞ্চলের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন থমকে গিয়েছে। এখন লোকসভা ভোট আসছে বলে টাকা পাঠানো হচ্ছে। তবে আদৌ তার সদ্ব্যবহার হবে কি না, তা সময়ই বলবে।”
তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তালড্যাংরার বিধায়ক তথা তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরূপ চক্রবর্তীর দাবি, “রাজ্য সরকার এখন সরাসরি মানুষের কাছ থেকে এলাকাভিত্তিক সমস্যা জেনে তার সমাধান করছে। গ্রামাঞ্চলের উন্নয়ন কোথাও থমকে নেই। যা কাজ আটকে রয়েছে, তার জন্য কেন্দ্রের বঞ্চনা দায়ী। একশো দিনের মজুরি, আবাস প্লাস যোজনার অর্থ বরাদ্দ না করে সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।”