বাঁকুড়া পুরসভা
সরকারি গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের উপভোক্তাদের থেকে নগদ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিস্তর। বাঁকুড়া শহরে এই ঘটনা রুখতে সচেষ্ট হলেন পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত। সোমবার শহরের চারটি ওয়ার্ডের উপভোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে সচেতন করা হয়েছে, কেউ যেন গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের জন্য বাড়তি টাকা (কাটমানি) না দেন।
বাঁকুড়া পুরসভা সূত্রে খবর, এ দিন শহরের ২০, ২১ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডের উপভোক্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন পুরপ্রধান। ‘হাউজ়িং ফর অল’ প্রকল্পের তৃতীয় দফার কাজ শুরু হতে চলেছে বাঁকুড়া শহরে। বাঁকুড়া শহরে তৃতীয় দফায় মোট ৫৫০ জন উপভোক্তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সরকারি ভাবে তাঁদের ৩ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা দেওয়া হবে, উপভোক্তাকে দিতে হবে ২৫ হাজার টাকা। মহাপ্রসাদবাবু জানান, প্রকল্পের কাজ শুরুর আগেই ওয়ার্ড ভিত্তিক উপভোক্তাদের পুরসভায় ডেকে প্রকল্পটি নিয়ে সচেতন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “দালালচক্রের হাতে সাধারণ মানুষ যাতে প্রতারিত না হন, সেই লক্ষ্যেই আমরা এই গৃহ নির্মাণ প্রকল্পটির বিষয়ে বিশদে মানুষকে বোঝাচ্ছি। কেউ তাঁদের কাছে এই প্রকল্পের জন্য নগদ টাকা চাইতে এলে তাঁরা যাতে পুরসভায় জানান, সেই আবেদনও করছি।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কাটমানি’ ফেরত দেওয়ার নির্দেশের পরে বাঁকুড়া জেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় তৃণমূল নেতাদের ঘেরাও করে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান কিছু লোকজন। বাঁকুড়া শহরে সরাসরি কোনও নেতাকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ হয়নি। তবে শহরের কয়েকটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগে পোস্টার পড়েছিল। জেলার রাজনীতির নিয়মিত পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, পুরভোটের আগে যাতে শহরে সরকারি গৃহ নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে স্বচ্ছতা বজায় থাকে সেই লক্ষ্যেই পুরসভা আগাম সতর্ক হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রের টিপ্পনী, “তৃণমূল জানে, তাদের নেতাদের নিষেধ করেও কাটমানি তোলা বন্ধ করা সম্ভব নয়। তাই এখন উপভোক্তাদেরই সতর্ক করতে উদ্যোগী হয়েছে ওরা।” মহাপ্রসাদবাবুর অবশ্য দাবি, “শুধু এ বার নয়, এর আগের দফাগুলিতেও সরকারি গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের উপভোক্তাদের ডেকে ডেকে প্রকল্প নিয়ে বোঝানো হয়েছিল। শহরে কোনও দিনই সরকারি প্রকল্পের উপভোক্তাদের থেকে টাকা তোলার অভিযোগ ওঠেনি। তা-ও সাধারণ মানুষ যাতে প্রতারিত না হন, সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।”