একজোট: ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ। বক্রেশ্বরে। নিজস্ব চিত্র
ফের শ্রমিক মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ চেয়ে আন্দোলন হল বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে। মঙ্গলবার সকালের ঘটনা। কত টাকা ক্ষতিপূরণ মিলবে তা নিয়ে রফাসূত্র না মিললেও, ক্ষতিপূরণ মিলবে সেই আশ্বাসে আন্দোলন থামে। তবে এ দিন কাজে যোগ দেননি শ্রমিকেরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, একটি ঠিকাদার সংস্থার হয়ে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কাজ করতেন চিনপাই লেবার কো-অপারেটিভ সোসাইটির শ্রমিক আনন্দ গড়াই। তাঁর বাড়ি সদাইপুর থানার দোলগোবিন্দপুরে। শুক্রবার কাজে গিয়ে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাতিল জিনিস বোঝাই গাড়ি থেকে পড়ে মারাত্মক জখম হন বছর ছেচল্লিশের ওই শ্রমিক। প্রথমে তাঁকে সিউড়ি জেলা হাসপাতাল এবং সেখান থেকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মঙ্গলবার ভোরে দুর্গাপুরের হাসপাতালেই মারা যান তিনি।
এলাকা সূত্রে খবর, শ্রমিকের মৃত্যুতে কেন তাঁর পরিবার ভেসে যাবে, পরিজনদের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে এ দিন সকালেই কাজ বন্ধ করে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের গেট আগলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন শ্রমিকেরা। সেখানে উপস্থিত হন মৃত শ্রমিকের পরিজনেরাও। ঠিক ছিল, ময়নাতদন্তের পরে বিকেলে দেহ ফিরলে আন্দোলন আরও জোরাদার করা হবে। তবে পুলিশ তা করতে দেয়নি। শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের আশ্বাস দেওয়া হয়, মৃত শ্রমিকের দেহ সৎকার করা হোক। বুধবার বিকেলে এ নিয়ে মৃতের পরিবার ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে ঠিকাদার, পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের মানবসম্পদ বিভাগ ও বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আধিকারিকেরা।
শনিবার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিটের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা একটি ঠিকাদার সংস্থার হয়ে কাজে আসা নদিয়ার যুবক গণেশ মণ্ডলের মৃত্যুর পরে, রবিবার একই ভাবে আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন সেখানকার শ্রমিকেরা। তাঁদের দাবি ছিল, নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ফাঁক থাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের বয়লারে কাজ করতে গিয়ে ভারী যন্ত্রাংশের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে মারাত্মক জখম হন গণেশবাবু। সময়ে অ্যাম্বুল্যান্স অসেনি। সিউড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় গণেশবাবুর।
আনন্দবাবু ওই কেন্দ্রের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে আঘাত না পেলেও নিরাপত্তায় ফাঁকফোকরের অভিযোগ এ দিনও তুলেছেন তাঁর সহকর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, বারবার এমন ঘটনা ঘটবে কেন? শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ কী হবে তার স্থায়ী সমাধানসূত্র বের করুন কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদার সংস্থা। তা না হলে মৃত শ্রমিকের পরিবার ভেসে যাবে।
এ ব্যাপারে আধিকারিকেরা কেউ মুখ খুলতে চাননি। তবে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের মানবসম্পদ বিভাগের আধিকারিক উপস্থিত না থাকায় ক্ষতিপূরণের বিষয়ে ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তা হয়নি। বুধবারই তা করা হবে।