সমস্যা সমাধানে ব্লক ও মহকুমা স্তরে বিশেষ কমিটি গড়ে কাজ শুরু করল প্রশাসন। —ফাইল চিত্র।
আইনি জটিলতায় রাজ্যের আবাস প্রকল্পের উপভোক্তা তালিকায় আসতে পারছেন না অনেকেই। সমস্যা সমাধানে ব্লক ও মহকুমা স্তরে বিশেষ কমিটি গড়ে কাজ শুরু করল প্রশাসন।
বাঁকুড়ার জেলা শাসক সিয়াদ এন বলেন, “আমাদের লক্ষ্য জেলার প্রতিটি কাঁচাবাড়ির বাসিন্দা এই প্রকল্পের আওতায় আসুক। তবে পরিবারের কর্তার মৃত্যু ও তাঁর উত্তরাধিকারী সংক্রান্ত সঠিক নথি না থাকায় কিছু পরিবার যোগ্য হলেও উপভোক্তা তালিকায় আসতে পারছে না। ব্লক ও মহকুমা স্তরে বিশেষ দল গড়ে যতদূর সম্ভব সমস্যাগুলি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।”
প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলায় উত্তরাধিকার সংক্রান্ত আইনি জটিলতায় উপভোক্তা তালিকার বাইরে রয়ে গিয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার। জেলার ২২টি ব্লকেই কমবেশি এমন পরিবার রয়েছে। রাজ্যের আবাস প্রকল্পের সমীক্ষার কাজ সারা হয়ে গেলেও আইনি জটিলতায় আটকে পড়া উপভোক্তাদেরতালিকায় সংযোজন করার সুযোগ এক সপ্তাহ পর্যন্ত রয়েছে। সেই লক্ষেই বিশেষ কমিটি গড়ে দরকারি নথিপত্র জোগাড়ের কাজশুরু করেছে প্রশাসন।
সূত্রের খবর, জেলায় প্রায় ১ লক্ষ ৯০ হাজার পরিবার আবাস প্রকল্পের তালিকায় ছিল। সমীক্ষার পরে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার। সমীক্ষায় সব থেকে বেশি নাম বাদ পড়েছে গঙ্গাজলঘাটি ও মেজিয়া ব্লকে। সেখানে সমীক্ষায় যথাক্রমে ২০ শতাংশ ও ১৭ শতাংশ পরিবার প্রকল্পের জন্য অযোগ্য বলে চিহ্নিত হয়েছে। সবচেয়ে কম পরিবার বাদ পড়েছে আয়তনে সব চেয়ে বড় ব্লক ওন্দায় (৭ শতাংশ)। অন্যান্য ব্লকে ৯-১১ শতাংশ পরিবার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। কিছু পরিবারের নাম তালিকায় থাকলেও সমীক্ষায় নেমে তাদের খোঁজ পায়নি জেলা প্রশাসন। সামগ্রিক ভাবে ৯৫ শতাংশ পরিবারে সমীক্ষা করা গিয়েছে।
প্রশাসন জানিয়েছে, জেলার ১৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের চূড়ান্ত উপভোক্তা তালিকা তৈরির কাজ শেষ। আজ, রবিবার পঞ্চায়েতে ওই তালিকা টাঙানো হবে। এছাড়া জেলাশাসক, মহকুমাশাসক ও বিডিও-র কার্যালয় এবং জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটেও ওই তালিকা থাকবে। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রামসভা করে তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। পরবর্তী দু’দিনের মধ্যে ব্লক ও জেলা কমিটি চূড়ান্ত তালিকা অনুমোদন করবে। ১৮-২০ ডিসেম্বরের মধ্যে না নথিভুক্তির পরেই রাজ্য সরকার উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে প্রকল্পের প্রথম দফার অর্থ পাঠাবে।
জেলাশাসক বলেন, “স্বচ্ছতার সঙ্গেই সুষ্ঠু ভাবে সমীক্ষার কাজ সারা হয়েছে। তালিকা প্রকাশের পর যে অভিযোগগুলি উঠে আসবে সেগুলিরও দ্রুত সমাধান করা হবে।”