তৃণমূল কর্মীর বাড়ির জানলা দিয়ে জ্বলন্ত পতাকা ছোড়া হয়েছে। — নিজস্ব চিত্র।
বীরভূমের বগটুই গ্রামে তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। রাতের অন্ধকারে জানলা দিয়ে জ্বলন্ত পতাকা ছুড়ে দেওয়া হল বাড়ির ভিতরে। এতে বিছানার একাংশ পুড়ে গিয়েছে। তার উপর থাকা কিছু জিনিসও পুড়ে গিয়েছে বলে দাবি। পরিবারের অনুমান, এই ঘটনার নেপথ্যে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে।
শনিবার রাতে যাঁর বাড়িতে আগুন ধরানোর চেষ্টা করা হয়েছিল, তাঁর নাম মুর্শিদা বিবি। অভিযোগ, রাতে তাঁদের বাড়ির পিছন দিকের জানলা দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কেরোসিন তেল লাগানো একটি পতাকায় আগুন ধরিয়ে জানলা দিয়ে ঘরের ভিতরে ছুড়ে দেওয়া হয় সেই পতাকা। তা গিয়ে পড়ে বিছানার উপর। এতে বিছানার চাদর, গদির বেশ কিছুটা অংশ পুড়ে যায়। বিছানার উপর ওষুধপত্র ছিল। তা-ও পুড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যেরা।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায় রামপুরহাট থানার পুলিশ। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
প্রতিবেশীদের তৎপরতাতেই বড় অঘটন আটকানো গিয়েছে বলে দাবি। মুর্শিদা জানিয়েছেন, তাঁরা বাড়ির অন্য দিকে ছিলেন। পিছন দিক থেকে কে ঘরের জানলা দিয়ে জ্বলন্ত পতাকা ছুড়ল, তা দেখতে পাননি। সকলের অলক্ষ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়লে বড়সড় দুর্ঘটনা হতে পারত। ঘটনার পর থেকে অত্যন্ত আতঙ্কে আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। পুলিশকেও খবর দিয়েছেন। তবে কে বা কারা এই কাজ করেছেন, তা তাঁরা নিজের চোখে দেখেননি। তাই কারও নামই সন্দেহের তালিকায় রাখতে রাজি নন। তবে তাঁদের ধারণা রাজনৈতিক কারণে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই বাড়িতে আগুন লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
ওই বাড়ির সদস্য আলম শেখ বলেছেন, ‘‘আমরা তৃণমূল কর্মী। কোন দল থেকে এই কাজ করা হয়েছে, জানি না। কারণ, আমরা কিছু দেখিনি। পুলিশকে জানিয়েছি। তারা দেখে গিয়েছে। তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে।’’
উল্লেখ্য, বীরভূমের রামপুরহাট এলাকার এই বগটুই গ্রাম শিরোনামে উঠে এসেছিল গত বছরের মার্চ মাসে। ২১ মার্চ বগটুই মোড়ে তৃণমূল নেতা তথা গ্রামের প্রাক্তন উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হন। এরপর সেই রাতেই বগটুইয়ের একাধিক বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয় অনেকের। শ্মশানের চেহারা নিয়েছিল গোটা গ্রাম। সেখানেই বাড়ির জানলা দিয়ে জ্বলন্ত পতাকা ছোড়ায় নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।