দলীয় পতাকা টাঙানো নিয়ে বিজেপি এবং তৃণমূলের সংঘর্ষ হল বাঁকুড়ায়। —প্রতীকী চিত্র।
তৃণমূল এবং বিজেপির সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় থানার গোপালপুর গ্রাম। বুধবার এই সংঘর্ষে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান-সহ মোট ৪ জন আহত হয়েছেন। ঘটনার দায় একের অপরের উপর চাপিয়েছে দুই শিবির। স্থানীয় সূত্রে খবর, দলীয় পতাকা বাঁধা নিয়ে গন্ডগোলের সূত্রপাত।
বিজেপির দাবি, গোপালপুর গ্রামে বিভিন্ন জায়গায় দলীয় পতাকা টাঙানোর কাজ করছিলেন স্থানীয় বিজেপি কর্মী আকাল গড়াই। সেই সময় তৃণমূল পরিচালিত পিড়রাবনি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান টুম্পা গড়াই ও তাঁর স্বামী দীপক গড়াই বাধা দেন। কেন পতাকা বাঁধতে দেওয়া হবে না, জানতে চান ওই অবিজেপি কর্মী। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, এর পর বিনা প্ররোচনায় দীপকের লোকজন লাঠি দিয়ে মারধর করেন আকালকে। লাঠির আঘাতে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেয়। পরে ওই বিজেপি কর্মীকে উদ্ধার করে বেলিয়াতোড় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। আহতের নিজের কথায়, ‘‘আমি বিজেপি করি। তা নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান ও তাঁর স্বামীর আক্রোশ ছিলই। বুধবার দুপুরে গ্রামে রাস্তার ধারে পতাকা বাঁধতে গেলে তাঁরা লাঠি দিয়ে আমার মাথা ফাটিয়ে দেন।’’
তবে সংঘর্ষের দায় ওই বিজেপি কর্মীর ঘাড়ে দিয়েছেন পিড়রাবনি গ্রাম পঞ্চায়েতের স্বামী তথা এলাকার তৃণমূল নেতা দীপক গড়াই। তিনি তুলে আনের পারিবারিক বিরোধের কথা। তাঁর কথায়, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। আকালের পরিবারের ২ জন অন্যের গাছ থেকে আম চুরি করেছিল। বাধা দিতে যাওয়ায় আকাল-সহ তাঁর পরিবারের লোকজন লাঠি, টাঙি নিয়ে আমাদের আক্রমণ করে। এই ঘটনায় আমি, আমার স্ত্রী এবং ভাই আহত হয়েছি।’’
এই ঘটনা নিয়ে বিজেপির বড়জোড়া ৫ নম্বর মণ্ডলের সভাপতি বিশ্বজিৎ রায় বলেন, ‘‘তৃণমূলের লোকজন বিন্দুমাত্র সত্যি কথা বলছেন না। আমাদের লোকজনের উপর হামলা করে আইনের ঝামেলা এড়াতে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান-সহ তাঁর স্বামী ও দেওরকে নিয়ে নাটক করছেন। আমরা বেলিয়াতোড় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাব।’’ অন্য দিকে, পঞ্চায়েত প্রধান টুম্পার অভিযোগ, ‘‘বিজেপির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আকালকে কেউ মারধর করেনি। ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা গরুর জাব খাবার পাত্রে পড়ে গিয়ে উনি আঘাত পান।’’ তাঁরাও পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপান-উতোর চরমে।