অসমের দিসপুরে বিশ্বভারতীর সঙ্গে মৌ স্বাক্ষর করল অসম সরকার।বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।
বিশ্বভারতীকে আগে পাঁচ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছিল অসম সরকার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অসমের দিসপুরে রাজ্য সচিবালয়ের জনতা ভবনে এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর সঙ্গে একটি মৌ স্বাক্ষর করল অসম সরকার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা, শিক্ষামন্ত্রী রনোজ পেগু, বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অরবিন্দ মণ্ডল, ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক কুমার মাহাতো।
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে বিশ্বভারতীকে এককালীন অনুদান হিসেবে পাঁচ কোটি টাকা দিয়েছিল অসম সরকার। সেই সময় অসম সরকারের সঙ্গে বিশ্বভারতীর বেশ কয়েকটি বিষয়ে চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়। প্রাথমিক ভাবে প্রস্তাব দেওয়া হয়, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অসমের ভক্তি আন্দোলন এবং অসমে বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের নামে চেয়ার (সাম্মানিক অধ্যাপক পদ) স্থাপন করা হবে। এর ফলে শঙ্করদেবের জীবনদর্শন, তাঁর অবদান নিয়ে গবেষণা করার সুযোগ পাবেন ছাত্রছাত্রীরা।
এর পরে পরেই অসমে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি প্রত্যাহারের প্রতিবাদে বিভিন্ন এলাকায় অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। সেই বিশ্বভারতীতেও বেশ কিছু সমস্যা থাকার ফলে অসম সরকারের সঙ্গে ওই চুক্তি স্বাক্ষর করা যায়নি। ফলে অসম সরকারের দেওয়া আর্থিক অনুদান অব্যবহৃতই ছিল। সম্প্রতি অসম সরকার এবং বিশ্বভারতী নতুন করে সেই চুক্তির ব্যাপারে আচলনা শুরু করে। অবশেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দু’পক্ষের মৌ স্বাক্ষরিত হয়। অসমের ভক্তি আন্দোলন নিয়ে পড়াশোনা, শঙ্করদেব এবং তাঁর ভক্তি আন্দোলনকে তুলে ধরা, এই সম্পর্কিত বিভিন্ন আলোচনাসভার আয়োজন করা-সহ গবেষণার কাজে সুযোগ করে দেওয়ার লক্ষ্যে এই চুক্তি হয়েছে বলে বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে।
এই চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়িত করে অসমের ধর্মীয় ইতিহাস, ভক্তি আন্দোলন নিয়ে গবেষণার কাজ শুরু করা হবে বিশ্বভারতীতে বলে সূত্রের খবর। এর জন্য আধ্যাপক, গবেষক নিয়োগ করার কাজ শুরু করা হবে। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক কুমার মাহাতো বলেন, “বিশ্বভারতী একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বহু ধরনের শিক্ষামূলক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত আছে। এই চুক্তি তারই প্রতিফলন। এমন একটি কাজ করার জন্য অসম সরকার বিশ্বভারতীকেই বেছে নিয়েছে। এতে আমার খুবই খুশি। খুব তাড়াতাড়ি এই চুক্তি বাস্তবায়িত করা হবে।”