পাশে: রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে মহিলাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় আশাকর্মীরা। রবিবার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
দিন সাতেক হল অনেকে ‘ভয়ে’ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাননি। গ্রামছাড়া হওয়ায় কেউ আবার প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে রাখতে পারেননি। সময়ে ওষুধ না-খাওয়ায় অসুস্থও হয়ে পড়েছেন কয়েক জন। সেই খবর পৌঁছে গিয়েছিল ব্লক স্বাস্থ্য দফতরে। রবিবার সকালে স্বাস্থ্য ও আশাকর্মীরা বগটুই গ্রাম ঘুরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করলেন, ওষুধও দিলেন।
বিডিও (রামপুরহাট ১) দীপান্বিতা বর্মণের কথায়, “বগটুই গ্রাম থেকে যাঁরা নিয়মিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসতেন, তাঁদের মধ্যে এখন যাঁরা আসতে পারছেন না, তাঁদের খোঁজ নেওয়া ও শারীরিক পরীক্ষা করতে স্বাস্থ্য ও আশাকর্মীদের পাঠানো হয়েছিল।” এ দিন সকালে তিন স্বাস্থ্যকর্মী ও ছ’জন আশাকর্মী বগটুই গ্রামে পৌঁছে যান। তাঁরা ইদগাহ মোড়ে পুলিশকর্মীদেরও শারীরিক পরীক্ষা করান। প্রয়োজনীয় ওষুধও সরবরাহ করেন। এরপরে গ্রামের ভিতর ঢুকে দরজায় কড়া নেড়ে ডাকতে থাকেন। আশাকর্মীদের দেখে ‘আতঙ্কিত’ মহিলারাও কোনও প্রশ্ন না করে বাড়ির দরজা খুলে দেন। কারও রক্তচাপ, কারও সুগার বা অন্য পরীক্ষা করেন। স্থানীয় বৃদ্ধা রুসিনা বিবি, সামায়াইয়া বিবিদের কথায়, “কয়েক দিন ধরে একরাশ আতঙ্ক চেপে বসেছে। সব সময় বুক ধড়ফড় করছে। ওষুধ ফুরিয়ে যাওয়ার পরেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভয়ে যেতে পারছি না। স্বাস্থ্যকর্মীরা গ্রামে আসায় যেন প্রাণ ফিরে পেলাম।”
স্বাস্থ্য কর্মীদের দাবি, এ দিন ১৯টি বাড়ি গিয়ে শারীরিক নানা পরীক্ষা করা হয়েছে। অনেক মহিলার সুগার বা রক্তচাপের মাত্রা বেড়ে গিয়েছে। অনেক বাড়ি তালা বন্ধ রয়েছে। সবাই আতঙ্কে রয়েছে, সেটা বোঝা যাচ্ছে। ব্লক মেডিক্যাল অফিসারের নির্দেশে আগামী দিনেও গ্রামে আসবেন বলে জানিয়েছেন। সাহিনা বেগম নামে এক মহিলার দাবি, “গ্রামে যা হয়েছে, সেই ভয়েই সুগার, রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছে।” গ্রামে অনেক গবাদি পশুও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। সেই খবর পেয়ে বিএলডিও (রামপুরহাট ১) দফতরের একটি দল বগটুই গ্রামে গিয়েছিলেন।