‘অপা’ বাড়িতে বসে সব বলছেন ঝর্না দাস। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
তাঁর দুই ফ্ল্যাট থেকে মিলেছে কোটি কোটি টাকা। যে বিপুল পরিমাণ গয়না উদ্ধার হয়েছে, তা দেখে আম জনতার চক্ষু চড়কগাছ। নামে-বেনামে তাঁর আরও বহু জমি-বাড়ি ছড়িয়ে আছে বলেই ইডি-র সন্দেহ। অথচ সেই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বহু-চর্চিত শান্তিনিকেতনের ‘অপা’ বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কেয়ারটেকাররা সময় মতো বেতন পেতেন না বলে অভিযোগ।
পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে তাঁদের বেতন বকেয়া রয়েছে বলে দাবি করলেন ‘অপা’ বাড়ির কেয়ারটেকারেরা। প্রান্তিকের ফুলডাঙায় যে জমির উপরে ‘অপা’ বাড়ি, সেই জমি ২০১২ সালে কলকাতার বাসিন্দার কাছ কেনেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা। ২০২০ সালে ওই জায়গাটি কেবল অর্পিতার নামে রেকর্ড করানো হয় বলে নথিপত্র ঘেঁটে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। সেই বাড়িতে মাঝেমধ্যেই পার্থ-অর্পিতা আসতেন বলে জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। ২০১৬-’১৭ সাল থেকে বাড়িটিতে কেয়ারটেকারের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন কঙ্কালীতলার বাসিন্দা ঝর্না দাস ও তাঁর স্বামী নিখিল দাস। ‘অপা’ বাড়ির চত্বরের মধ্যেই পিছনের দিকে ছোট একটি ঘরে ওই দম্পতি থাকেন। তাঁরা জানালেন, এত বছর ধরে কাজ করেও তাঁদের বেতন ছিল মাত্র চার হাজার টাকা। নিখিল অন্যের বাগানে মালির কাজ করে দু’হাজার টাকা পান। এতেই কোনও রকমে দু’জনের সংসার চলে যায়।
শুক্রবার ঝর্না জানালেন, দুর্গাপুজোয় মাঝেসাজে শাড়ি মিলত ঠিকই। কিন্তু, মাসমাইনের টাকা তাঁরা সময়ে পেতেন না। ঝর্না বলেন, “উনি( অর্পিতা) যে এত টাকার মালিক, তা ঘুণাক্ষরেও কখনও টের পাইনি! টিভিতে সব দেখে আমরাও খুব অবাক হয়ে গেছিলাম। তবে সময়ে আমরা কোনও দিনই মাইনে পেতাম না। ছ-সাত মাস পরে যখন উনি আসতেন, তখন মাইনে দিতেন।’’ তাঁর দাবি, গত পাঁচ মাসেরও বেশি সময়ের বেতন বাকি রয়েছে। সেই বেতন এখন কী ভাবে পাবেন, আদৌ পাবেন কি না, তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ধর্না-নিখিল।
অর্পিতার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ ক’দিন আগে তোলেন উত্তর ২৪ পরগনার বরাহনগরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক। ওই বাজারে অর্পিতার পার্লার থাকলেও ‘মেনটেন্যান্স ফি’ বাবদ মাসিক খরচ মেটাতেন না বলে অভিযোগ। ‘অপা’র কেয়ারটেকার দম্পতির অভিযোগও তাই। তাঁদের এখন চিন্তা, কেন্দ্রীয় সংস্থার নজরে থাকা বাড়টিতে তাঁরা কত দিন থাকতে পারবেন, বাড়িছাড়া হলে কোথায় গিয়ে থাকবেন।