গত বছর তাঁর স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার কথা ছিল। শুক্রবার সিকিমে মৃত্যু হয়েছে বাঁকুড়ার সেনা জওয়ানের। —নিজস্ব চিত্র।
সিকিমে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বাঁকুড়ার সেনা জওয়ান গোপীনাথ মাকুড়ের। সেই খবর এসে পৌঁছনোর পর শুক্রবার সারা রাত দু’চোখের পাতা এক করতে পারেনি বিষ্ণুপুর ব্লকের ভালুকা গ্রামের মাকুড় পরিবার। শোকস্তব্ধ পুরো গ্রাম। মাত্র ৩৯ বছরের তরতাজা যুবক যে আর নেই, তা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। শনিবার দিনভর গোটা গ্রামের মানুষ অপেক্ষা করছেন কখন এসে পৌঁছবে গোপীনাথ। তাঁকে শেষ বার চোখের দেখা দেখতে চান সবাই।
বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত এলাকায় বেড়ে ওঠা গোপীনাথের। নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা ছেলেটি ২০০১ সালে যোগ দেন সেনাবাহিনীতে। তাঁর পরিবার সূত্রে খবর, গোপীনাথের ইচ্ছে ছিল বছর খানেক আগে স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জেরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠেন।
স্ত্রী ছাড়াও একমাত্র ছেলে রয়েছে গোপীনাথের। ১১ বছরের ছেলের পড়াশোনার সুবিধার জন্য বাঁকুড়া শহরে বাড়ি তৈরি করছিলেন গোপীনাথ। ইচ্ছে ছিল আগামী বছর মার্চে ছুটি নিয়ে বাড়িতে ফিরে নতুন বাড়িতে প্রবেশ করবেন। কিন্তু তা আর হল না। শুক্রবার উত্তর সিকিমের লাচেন থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে জেমা নামক এলাকায় তিনটি গাড়ির কনভয় নিয়ে থাঙ্গুর দিকে এগোচ্ছিল সেনার একটি গাড়ি। পাহাড়ি বাঁকে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ১৬ জন সেনার। আহত হন ৪ জন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন গোপীনাথও। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেনাবাহিনীর তরফে ফোন করে স্ত্রী মল্লিকা মাকুড়কে গোপীনাথের মৃত্যুসংবাদ দেওয়া হয়।
মল্লিকা বলেন, “স্বামীর চাকরি ২০ বছর হয়ে গিয়েছিল। গত বছর স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার কথা থাকলেও করোনার জন্য আরও ২ বছর পিছিয়ে যায়। মাস চারেক আগে ওকে সিকিমে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার ওর সঙ্গে শেষ কথা হয়।’’