নিয়োগপত্র হাতে। নিজস্ব চিত্র
মহম্মদবাজারের প্রস্তাবিত কয়লা শিল্পাঞ্চলের আরও ২৫ জন জমিদাতার মনোনীত প্রার্থীর হাতে শনিবার চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিলেন বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়। এ দিন চাকরি প্রাপক ২৫ জনকেই গ্রুপ ডি পদে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। এই নিয়ে জমিদাতাদের পরিবার থেকে প্রায় ৬০০ জনকে জুনিয়র কনস্টেবল পদে এবং প্রায় ৩০০ জনকে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ করা হল বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক।
গত বৃহস্পতিবার সিউড়িতে একটি জনসভায় এসে দেউচা পাঁচামির কয়লাখনিকে ভুয়ো এবং মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া এক লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতিকে ভাঁওতা বলে একযোগে কটাক্ষ করেছিলেন অধীর চৌধুরী ও মহম্মদ সেলিম। কিন্তু তার দু’দিনের মাথাতেই এ দিন নতুন করে পঁচিশ জনের হাতে তুলে দেওয়া হল নিয়োগপত্র। আগামী সোমবার থেকেই তাঁরা কাজে যোগ দিতে পারবেন বলেও জানানো হয়।
এ দিন যাঁদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়, তাঁরা প্রধানত শিল্পাঞ্চলের অনাদিবাসী এলাকার মানুষ। ওই এলাকাগুলিতে শিল্পাঞ্চল নিয়ে বিশেষ কোনও বিরোধিতা না থাকলেও চাকরি নিয়ে দীর্ঘদিনের চাহিদা ছিল, এ দিন সেই চাকরির নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে খুশি সকলেই। সালুকার বাসিন্দা ২৭ বছরের নাজিমুদ্দিন শেখ, কবিলনগরের বছর ৩৪ এর মহম্মদ আমানুল্লাহ, সালুকা থেকে বিয়ের পর রামপুরহাটে চলে আসা ২৫ বছরের প্রিয়াঙ্কা সাহা সকলেরই দাবি, ‘‘চাকরিটা অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল। প্রশাসনের সহযোগিতায় নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে স্বস্তি পেলাম।’’ শুধু এই ২৫ জনই নয়, ভবিষ্যতে ওই এলাকার আরও অনেকেই চাকরি পাবেন বলেও এ দিন জানান জেলাশাসক।
কয়লা শিল্পাঞ্চলে জমিদাতাদের পরিবারের সদস্যকে চাকরি দেওয়ার যে ঘোষণা করা হয়েছিল, সেখানে নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা ঠিক করা হয়েছিল অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ। কিন্তু বেশ কিছু পরিবারে তেমন কোনও প্রার্থী না থাকায় চতুর্থ শ্রেণি উত্তীর্ণকে মানদণ্ড ধরেই এই নতুন নিয়োগ দেওয়া হল। একই সঙ্গে জেলাশাসক জানান, প্রস্তাবিত কয়লাখনি এলাকার কোন স্থানে কত নীচে, কত পরিমাণে এবং কেমন গুণমানের কয়লা রয়েছে, তা খুঁজে দেখার জন্য যে কূপ খনন করা হয়েছিল, তার রিপোর্ট এখন তৈরি করা চলছে। রিপোর্ট প্রস্তুত হয়ে গেলেই মুখ্যমন্ত্রী কয়লা উত্তোলনের দিনক্ষণ ঘোষণা করবেন।
জেলাশাসক বলেন, “এটা মানুষের প্রকল্প। আমরা প্রশাসনের তরফ থেকে ওই এলাকার প্রত্যেক মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি, তাঁরা আমাদের কথা বুঝে প্রকল্পে সায় দিয়েছেন। যে অল্প কয়েকজন এখনও বিষয়টি সঠিক ভাবে বুঝতে পারেননি বা বুঝতে অসুবিধা আছে, আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে ভাবে আমরা তাঁদের বোঝাচ্ছি তাতে দ্রুত তাঁরা এগিয়ে আসবেন।”