অনুব্রত (কেষ্ট) মণ্ডল। ছবি: সংগৃহীত।
এ বার জেলা সিপিএমকে কটাক্ষে ভরিয়ে দিলেন অনুব্রত (কেষ্ট) মণ্ডল।
অনুব্রত অভয় দিলেই নাকি বীরভূমের সিপিএম নেতারা মিটিং, মিছিল করেন। সোমবার পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের এক সভায় এমনই দাবি করলেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি। জনসভায় অনুব্রত বলেন, ‘‘আমি অভয় দিলেই সিপিএম নেতারা জেলায় মিটিং-মিছিল করেন। এই যে বিমান (বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু), সেলিম (সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহম্মদ সেলিম) মিটিং করে গেল, তার আগে সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা ফোন করেছিলেন।’’ এমন কথা শুনে বিরক্ত মনসা হাঁসদা বলছেন, ‘‘ওঁর সব কথার প্রতিক্রিয়া দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।’’ সোমবার বার্নপুরে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুও অনুব্রতর সমালোচনা করেন। বিমানের কথায়, ‘‘উনি সম্ভবত গণতন্ত্রের লোক নন। গুন্ডাতন্ত্রের লোক। তাঁর আচরণ সেরকমই। তাঁর দলের উপরমহলের উচিত তাঁকে গণতন্ত্রের পাঠ দেওয়া।’’
বীরভূমের সিউড়িতে এ দিন অনুব্রতকে গ্রেফতারের দাবিতে সিপিএমের মিছিল করার কথা ছিল। কিন্তু, পরে তা বাতিল হয়। বিকেলে আউশগ্রামে এক সভায় সেই প্রসঙ্গ তুলে অনুব্রত বলেন, ‘‘আমি শুধু বলেছি, হাত তুলে নেব। আর কিছু বলিনি। তা হলে কে বারণ করল মিছিল করতে? মানুষকে এত ভয় কীসের?’’ যদিও অনুব্রতর বক্তব্যের আগেই এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ সংবাদমাধ্যমকে ডেকে সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলেন, ‘‘শিবপুরে অনুব্রতর হুমকির প্রতিবাদ এবং জেলা তৃণমূলের সভাপতির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার দাবিতেই সিউড়িতে মিছিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সিউড়ি থানার পুলিশ মৌখিক অনুমতিও দিয়েছিল। কিন্তু, শাসকদলের ইশারায় পুলিশ নিজেদের অবস্থান থেকে সরে গিয়ে মিছিল করতে নিষেধ করে।’’ সিপিএম সূত্রের খবর, গোলমালের রাস্তায় না হেঁটে মিছিল না করারই দলগত সিদ্ধান্ত হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন প্রতিটি ব্লকে মিছিল করার কর্মসূচি রয়েছে তৃণমূলেরও। দু’দলের মধ্যে সংঘাত এড়াতে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এক তৃণমূল নেতার অবশ্য কটাক্ষ, ‘‘মিছিলে লোক হবে না বলেই সম্ভাবত পিছিয়ে গিয়েছে সিপিএম।’’ আউশগ্রামের সভায় শিবপুরের জমি আন্দোলনকে নিশানা করেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা অভিজিৎ সিংহও। এ দিন আউশগ্রামের সভায় বলেন, ‘‘শিবপুরে ২০০১ সালে সিপিএম জমি দখল করেছিল। সেই জায়গা পড়েছিল। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসন প্রকল্প করতে চাইছেন। যে জমি অধিগ্রহণ হয়ে গিয়েছে, চাষিদের আপত্তি নেই, সেখানে আবার আন্দোলন কীসের?’’