Anubrata Mondal

অনুগামীদের ভিড়, ফুলের বৃষ্টি, দু’বছর পর বোলপুরে ফিরে কেষ্ট বললেন, ‘দিদির জন্য আছি, বরাবর থাকব’

সোমবার রাতে তিহাড় থেকে মুক্তি পেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকে নিয়ে বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়িতে ফেরেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৭:৪৮
Share:

বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়িতে ফিরলেন অনুব্রত মণ্ডল। — নিজস্ব চিত্র।

দু’বছরেরও বেশি সময় পরে বীরভূমে ফিরলেন অনুব্রত মণ্ডল। প্রথমে আসানসোল সংশোধনাগারে এবং তার পর প্রায় দেড় বছর দিল্লিতে তিহাড় জেলে বন্দি ছিলেন তিনি। তিহাড় থেকে মুক্তির পর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের সঙ্গে সোমবার রাতের বিমানেই কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার ভোরে পৌঁছন কলকাতায়। দমদম বিমানবন্দরে অবতরণের পর ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ সোজা বীরভূমের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন সুকন্যা এবং অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ আরও কয়েক জন নেতা। সকাল ৯টা নাগাদ সড়কপথে বর্ধমান হয়ে বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়িতে ফেরেন তিনি।

Advertisement

জেলায় অনুব্রতের প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় সকাল থেকেই বোলপুরে নিচুপট্টির বাড়ির সামনে ভিড় জমতে শুরু করেছিল দলীয় কর্মী-সমর্থকদের। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ভিড় বৃদ্ধি পেয়েছে। বাড়িতে প্রবেশের সময় দৃশ্যত ছলছল চোখ ছিল অনুব্রতের। বাড়ির এক তলায় দলীয় কার্যালয়ে বসে কথা বলতে বলতে একটি পর্যায়ে কেঁদেও ফেলেন তিনি।

বীরভূমে ফেরার পথে বর্ধমান পার করে একটি জায়গায় কিছু ক্ষণের জন্য থামে অনুব্রতের গাড়ি। সেই সময় গাড়ির কাচ নামিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অনুব্রত। তিনি জানান শারীরিক সমস্যার কথা। পায়ে ও কোমরে ব্যথার কথাও জানান। তিনি বললেন, “আমি আদালতকে সম্মান করি, আইন মেনে চলি।” সঙ্গে এ কথাও বললেন, “দিদির জন্য আছি, বরাবরই থাকব।” মুখ্যমন্ত্রী এবং গোটা রাজ্যবাসীকে শারদীয়ার শুভেচ্ছাও জানান তিনি।

Advertisement

অনুব্রতের গ্রেফতারির পর মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “কেষ্টকে বীরের সম্মান দিয়ে ফিরিয়ে আনব।” ঘটনাচক্রে মমতারও মঙ্গলবার বীরভূম জেলায় প্রশাসনিক কর্মসূচি রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আবহে বীরভূমে প্রশাসনিক বৈঠক করার কথা রয়েছে তাঁর। ঠিক সেই দিনেই কারামুক্তির পর বীরভূমে ফিরছেন অনুব্রত। দলনেত্রীর সঙ্গে কি মঙ্গলবার সাক্ষাৎ হবে অনুব্রতের? তা নিয়েও চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে। অনুব্রতকে সে প্রসঙ্গে প্রশ্ন করায় তিনি জানান, শরীর ভাল থাকলে দেখা হবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে।

বোলপুরের নিচুপট্টিতে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির সামনে কর্মী-সমর্থকদের ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।

২০২২ সালের ১১ অগস্ট গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন অনুব্রত। সে দিন ছিল রাখিপূর্ণিমা। গ্রেফতারির পর প্রথম দিকে তিনি ছিলেন আসানসোল সংশোধনাগারে। পরে গরু পাচার সংক্রান্ত মামলাতেই ইডিও গ্রেফতার করে তাঁকে। সেই সময় তাঁকে আসানসোল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল দিল্লিতে। রাখা হয়েছিল তিহাড় জেলে। গত সপ্তাহেই তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়। তবে আইনি প্রক্রিয়ার জন্য জেলমুক্তিতে কিছুটা বিলম্ব হয় এবং সোমবার রাতে তিহাড় থেকে মুক্তি পান তিনি। ওই একই মামলায় মেয়ে সুকন্যাও কিছু দিন আগে জামিন পেয়েছেন। তবে বীরভূমে ফেরেননি। দিল্লিতেই ছিলেন, অনুব্রতের মুক্তির অপেক্ষায়। মঙ্গলবার পিতা, কন্যা একসঙ্গেই ফিরলেন বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়িতে।


অনুব্রতের জামিন নিশ্চিত হতেই বেশ সাজ সাজ রব ধরা পড়েছিল বীরভূমের নিচুপট্টি এলাকায়। দুই বছর দুর্গাপুজোয় তিনি ছিলেন না এই বাড়িতে। তবে এ বার পুজোর আগেই বোলপুরের বাড়িতে ফিরছেন তিনি। দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট থেকে জামিন নিশ্চিত হতেই অনুব্রতের বাড়িতে শুরু হয়েছিল রং করার কাজ, ঝাড়পোঁছ, আগাছা সাফাই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement