Anubrata Mondal

হোয়াট্‌সঅ্যাপে লড়াই করে ‘কেষ্টদা’কে আনতে গিয়েছিলেন দুই তৃণমূল নেতা, কে পেলেন ‘দাদা’র পরশ?

শুক্রবার অনুব্রতের জামিনের খবর নিয়ে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম তৃণমূলের হোয়াট্‌সঅ্যাপ গ্রুপে শুরু হয় লালন-অরূপের দ্বন্দ্ব। তার পর দু’জনেই যান দিল্লি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০১:২৮
Share:

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

‘কেষ্টদা’র দুঃসময়ে কে পাশে ছিলেন তাই নিয়ে হোয়াট্‌সঅ্যাপ গ্রুপে লড়াই করে দুই নেতাই গিয়েছিলেন দিল্লি। দু’জনেই জানিয়েছিলেন ‘দাদা’কে নিয়ে ফিরবেন। এক জন আউশগ্রাম-২ ব্লকের তৃণমূলের প্রাক্তন কার্যকরী সভাপতি অরূপ মিদ্যা। অন্য জন আউশগ্রাম-২ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি আব্দুল লালন। তবে সোমবার রাতে কেষ্টর পাশে জায়গা পেয়েছেন লালন। অরূপকে দেখা যায়নি।

Advertisement

অরূপের দাবি, তিনি দিল্লিতে রয়েছেন শনিবার থেকে। তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে কিন্তু কথা হয়নি ‘কেষ্টদা’র। আর আনন্দবাজার অনলাইনকে ফোনে লালন জানালেন, তিনি ‘কেষ্টদা’র সঙ্গেই আছেন।

১৮ মাস পর কারামুক্তি হয়েছে অনুব্রতের। সোমবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ তিহাড় জেল থেকে বেরিয়ে মেয়ের সঙ্গে গাড়িতে ওঠেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবীরা ছাড়া কয়েক জন ‘দাদার অনুগামী’। সম্ভবত রাত ২টো ২০ মিনিটের উড়ানে দিল্লি থেকে দমদমের উদ্দেশে রওনা দেবেন সবাই।

Advertisement

শুক্রবার অনুব্রতের জামিনের খবর নিয়ে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম তৃণমূলের হোয়াট্‌সঅ্যাপ গ্রুপে শুরু হয় লালন-অরূপের দ্বন্দ্ব। কেষ্টর জামিনের খবর লিখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে লালনকে কটাক্ষ করে অরূপ লিখেছিলেন, ‘‘মহাগুরুর জামিনের খবর পেয়ে গোটা আউশগ্রাম আনন্দে। শুধু পিতা-পুত্র বাদ।’’ ওই গ্রুপে লালনের চটজলদি জবাব ছিল, ‘‘যখন কেষ্টদা জেলে গেল তখন ভাবল লালনের সব শেষ। কেষ্টদাকে বুড়ো সিংহ বলেছিলে। আজ আবার কেষ্টদা জেল থেকে বেরোচ্ছে বলে লাইন দিচ্ছ?...আমাদের তো একটাই বাবা। তাই এক জনকেই বাবা বলি।’’

তার জবাবে আবার অরূপ লেখেন, ‘‘বেশি ফোঁস করার চেষ্টা করিস না। জনগণ নেউল হয়ে গেলে পালানোর পথ পাবি না।’’ আবার জবাব দেন লালন। লেখেন, ‘‘ঠিক যে ভাবে তুই ভাল্কি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিস।’’ এ ভাবেই চলতে থাকে দুই নেতার ‘হোয়াট্‌সঅ্যাপ তরজা’। সেই দ্বৈরথে যুযুধান দুই তৃণমূল নেতার কে শেষ পর্যন্ত জয়ী হন জানা যায়নি। তবে দিল্লিযাত্রায় কিস্তিমাত বোধ হয় লালনই করলেন।

দু’বছর আগে গরুপাচার মামলায় জেলে যাওয়ার পর থেকে আউশগ্রামে তৃণমূলের সাংগঠনিক ক্ষেত্রে কিছু রদবদল হয়েছে। যেমন আউশগ্রাম-২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতির পদ থেকে রামকৃষ্ণ ঘোষকে সরিয়ে বসানো হয় লালনকে। লালন বরাবর অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। এক সময় অরূপের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলেও কেষ্টর জেলযাত্রার পর দুই নেতার মধ্যে প্রকাশ্যে সংঘাত বাঁধে। যে বৈরিতা চলছে অনুব্রতের জামিনের খবর প্রকাশের পরেও। সোমবার লালন ফোনে জানালেন, তিনি অনুব্রতের সঙ্গে একই ফ্লাইটে কলকাতা ফিরবেন। একই দাবি করেছেন অরূপও। কিন্তু তাতে মান্যতা দেননি দলেরই একাংশ। বস্তুত, শনিবার থেকে তৃণমূল বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডারের পাশাপাশি লালন ও তার ছেলে সেখ সঞ্জু যে কেষ্টর কাছাকাছি রয়েছেন, সে খবর মিলেছে তৃণমূল সূত্রে। অর্থাৎ, কেষ্টর কারামুক্তির ‘প্রথম রাউন্ডে’ দড়ি টানাটানিতে বেশ এগিয়ে গেলেন লালন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement